কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
কলকাতা প্রেস ক্লাব এ এক সাংবাদিক সম্মেলন করে কলকাতা থেকে ট্রাম তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে সরব, ‘ কলকাতা ট্রাম ইউজার অ্যাসোসিয়েশন ‘
হাই কোর্টের নির্দেশের পরে ও কলকাতা পুলিশ , কলকাতা পৌর সংস্থা এবং পরিবহন দফতর ট্রাম চালাতে চাইছে না বলে অভিযোগ সংগঠনের সভাপতি দেবাশীষ চক্রবর্তী। সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ পুলিসের এই বিষয় নিয়ে সম্পূর্ন ভিত্তিহীন বলে জানান তিনি। এদিন প্রেস ক্লাবে এই সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন প্রখ্যাত পরিচালক গৌতম ঘোষ , সিপিএম এর রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সহ সংগঠনের সদস্যরা ।
এই বিষয় গৌতম ঘোষ জানান যে আমরা এই বিষয়ে নিদান করতে পারিনা। আমরা শুধু আবেদন করতে পারি। যাতে রাজ্য সরকার ট্রাম বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসে। এশিয়ার সবচে পুরনো কলকাতার ট্রাম। তাই আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাছে আবেদন জানাবো। তিনি অনেক মেলা গান ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করেন। তাই ট্রাম কে বাঁচানোর জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রী কাছে আবেদন জানাবো। আমাদের শহরে অনেক জায়গায় থেকে ট্রেনে শুটিং করতে আসে। কারণ এ দেশে কোথায় ট্রাম নেই । তিনি বলেন অন্য শাহর থেকে কলকাতা পুলিসের ট্রাফিক ব্যবস্থা সবচে ভালো। আর যদি এই কলকাতা পুলিশ যদি বলে যে তারা ট্রামের জন্য ট্রাফিক ঠিক রাখতে পারবে না।
এটা ঠিক নয়। সমস্ত দেশে ট্রাফিক কে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাহলে কি সেই ভাবে কলকাতা পুলিশ ট্রাফিক সামলাতে পারে না। কি করে আমরা ট্রাম কে রেখে ট্রাফিক ব্যবস্থা কে সঠিক পদ্ধতিতে পরিচালনা করতে পারি। আশ করি পরিবহন দফতর সেই ব্যাবস্থা নেবেন। তিনি আরো বলেন যে যদি গাড়ির কন্ট্রোল রাখা যায়। তাহলে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার সম্ভব । তার দাবি অনেক জায়গায় ট্রাম চালানো যায়। ট্রাম লাইন কে কি ভাবে ঠিক করে রাখা যায় সেটা যদি ট্রাফিক পুলিশ ভালো ভাবে পরিকল্পনা করে তাহলে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব বলে জানান গৌতম ঘোষ। তিনি বলেন ইলেকট্রিক বাস এলে ভালো। কিন্তু তার ভয়ংকর দিক হচ্ছে তার ব্যাটারি নষ্ট করা সময় বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। অনেক দেশে ট্রাম ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ট্রাম কে রেখেই কলকাতা ভালো ভাবে চলতে পারে। আমরা ট্রাম ছাড়া কলকাতা ভাবতে পারি না বলে জনানলেন গৌতম ঘোষ।
অন্যদিকে সাংবাদিক সম্মেলনে মোহাম্মদ সেলিম আগে জানিয়ে দেন যে আমি এখনে কেন। একজন কলকাতাবসি হিসাবে এখনে এসেছি। আসলে ট্রাম দূষণমুক্ত , সস্তা এবং মানুষের জন্য উপকারী। কলকাতা এখন সবচে বেশি দূষণ আছে। তিনি বলেন একসময় কলকাতায় 240 টি ট্রাম ছিল। এখন কলকাতা পৌর সংস্থার মেয়র বলছেন জয় রাইডার জন্য এবং পর্যটনের জন্য ট্রাম যাতে রেখে দেওয়া হয়। তাই মেয়র বলছেন মাত্র 4 টি রুটে ট্রাম থাকবে না। তার দাবি কোনো পরিবহন শুধু মাত্র শৌখিনতার জন্য রাখতে পারি না। ট্রামএর জন্ম থেকে ঘোড়ার ট্রাম দিয়ে শুরু হয়েছিল। শুধু মাত্র ঐতিঝ আর পর্যটনের জন্য ট্রাম রাখার কোনো মানে হয় না। আসলে ট্রাম কে গিলে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মোহাম্মদ সেলিম। তার দাবি অনেক জায়গায় ট্রেনের তার ছিঁড়ে গেলে সেটা চুরি হয়েছে। আবার অনেক জায়গায় ট্রামের লাইন পিচ ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ট্রাম ডিপো গুলিকে নির্মাণ সংস্থায় পরিণীত করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে ট্রাম সরিয়ে দিয়ে এলকট্রিক বাস নিয়ে আসা হবে। তিনি প্রশ্ন তুললেন যে পুলিশ কবে থেকে ট্রাম এর বিশেষজ্ঞ হল। তারা শুধু ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করার কাজ করেন। তারা পরামর্শদাতা হতে পারে না। খেয়ে ফেলা আর গিলে ফেলা এবং বেছে দেওয়ার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আমরা সাচ্ছার হছি । আমাদের জীবনের সমস্ত সময় ট্রামের দিয়ে শুরু হয়েছে। মোহাম্মেদ সেলিম এর দাবি কলকাতা কলকাতা থাকবে না যদি ট্রাম না থাকে । কলকাতা মানে শুধু একটা উৎসব নয়। কলকাতা মানে তার ঐতিঝ কে সঙ্গে নিয়ে চলার নাম। তার দাবি অটোমোবাইল শিল্পের যোগসাজশ করে ট্রাম তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে। তাই কলকাতা বসি কে রুখে দাড়াতে হবে। কলকাতা পৌর সংস্থার মেয়র আগে বলেছিলেন যে কলকাতার চারটে রুটে ট্রাম থাকবে। তিনি এখন বলছেন শুধু মাত্র একটা রুটে ট্রাম থাকবে বলে অভিযোগ জানান মোহাম্মেদ সেলিম। আমার মনে হয় ট্রাম কে শুধুমাত্র ঐতিঝ বলে না রেখে গণ পরিবহন ব্যবস্থার হিসাবে ব্যাবহার করতে হবে। যদি একটু দরদ থাকে একটু মানবিকতা থাকে তাহলে ট্রাম কে বাঁচানো সম্ভব বলে জানান মোহাম্মেদ সেলিম।
বিস্তারিত দেখুন : ⇓