কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশের আগামী ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের আগে মাঠের (সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি)প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ১ লাখ ৮৯ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করেছে।
বর্তমানে, দেশের পুলিশ বাহিনীতে বেসামরিক স্টাফ সহ প্রায় ২.১৩ লাখ কর্মী রয়েছে,
পুলিশ সদর দফতরের উপ-মহাপরিদর্শক (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন জানান, দেশব্যাপী মোট ১,৮৯,০০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে, যারা ভোটের দিন ম্যাজিস্ট্রেটদের সাথে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন, টহল ও স্ট্রাইক টিমে কাজ করবেন। অন্যদিকে ১,৭৪,০০০পুলিশ সদস্য বিনা ছুটিতে দায়িত্ব পালন করবেন এবং বাকি ১৫,০০০পুলিশ সদস্য নিয়মিত কাজে নিয়োজিত থাকবেন।
সহিংসতা বা অনিয়মের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
অন্যদিকে গত ২৯ অক্টোবর থেকে অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দেশব্যাপী হরতাল ও পরিবহন অবরোধ করে ।
নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি সরকার প্রত্যাখ্যান করায় সাধারণ নির্বাচন বর্জন করছে বিএনপি।
একটি মিডিয়ার তথ্য অনুসারে, রাজনৈতিক সহিংসতায় গত দুই মাসে ১১ জন মারা গেছে, ৩৮৬ টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং চারটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে বলে খবর।
এমত অবস্তায় সহিংসতার অভিযোগে পুলিশ বিএনপি নেতা ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মী ও ব্যক্তিত্বকে গ্রেপ্তার করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু বা নিরপেক্ষ হবে না বলে বিরামহীন ধর্মঘট ও পরিবহন অবরোধের ডাক দিয়ে নির্বাচন বিরোধী রাজপথে প্রচারণা চালাচ্ছে বিএনপি।
একইসাথে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আইন অমান্য করার আহ্বান জানিয়েছে, দেশের সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনী তদারকির জন্য একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের দাবিতে চাপ দেওয়ার জন্য জনগণকে কর এবং ইউটিলিটি বিল না দেওয়ার আহ্বানও করেছে ।
যদিও বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, যা দলের নেতারা পরবর্তীতে কার্যত স্বীকার করেন যে ওটা একটা রাজনৈতিক ভুল ছিল,এবং একইসাথে অভিযোগ করে যে ভোটটি ব্যাপক কারচুপি এবং ভয় দেখানোর হয়েছিল।
গত শুক্রবার, বাংলাদেশ যেন সাধারণ নির্বাচন একটি অবাধ, সুষ্ঠ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় তা নিশ্চিত করতে সারাদেশে আধাসামরিক বর্ডার গার্ডের ১,১৫১ প্লাটুন মোতায়েন করেছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে ১৩ দিন পুলিশ , র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে একযোগে কাজ করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য প্রধান পশ্চিমা দেশগুলি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিশেষ করে বিএনপির সাথে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিল, তবে উভয় পক্ষের অনিচ্ছার কারণে কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি।
বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় এবং এর বিরুদ্ধে অন্য কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায়, হাসিনার আওয়ামী লীগ সম্ভবত একটি বড় হাত পেতে পারে এবং সম্ভবত টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে পারে ।