কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
জলপথ কে সাক্ষী রেখে একই সুতোয় আবারও জুড়ে রইল
দুই “বাংলা “
এম বি রাজারহাট-সিয়ের হাত ধরে।
বাঙালি সব সময় ভ্রমনপিপাসু। ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ যাওয়ার বিমান,রেলপথে এবং সড়ক পথের যোগাযোগ রয়েইছে।এবার কলকাতা থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় নৌ ভ্রমন করতে পারবে ভ্রমনপিপাসু মানুষজন। সঙ্গে বাড়তি পাওনা দুই বাংলার সুন্দরবন।
দুই বাংলার মেলবন্ধনে কলকাতার গঙ্গা নদীর জলপথে এই বিলাসবহুল যাত্রা শুরু হয়েছে । বাংলাদেশের এমকে শিপিং লাইন্স ও ভারতের কনিস্ক শিপিং লাইন্স পক্ষ থেকে কলকাতা থেকে ঢাকা নৌপথে রাজারহাট-সি জাহাজ যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি দুই দেশের সুন্দরবন প্রদর্শনের প্যাকেজ ট্যুরের ব্যবস্থা করেছে।
জলপথে এই ভ্রমণে পর্যটকরা আসবেন দুই বাংলার সুন্দরবন ছুঁয়ে। এর আগে ১৯৭২ সালে এই ধরনের জলপথে যাত্রা শুরু হলেও পরবর্তীতে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। ফের দুই দেশের বেসরকারি উদ্যোগে পানিপথের যাত্রা শুরু হয়েছে।
৩ দিনের যাত্রায় ঢাকা থেকে ছেড়ে চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, কাউখালীত, জিএম চ্যানেল,মঙ্গলা, আংটিহারা, হেমনগর, নামখানা, ডায়মন্ডহাবরা হয়ে কলকাতায় প্রবেশ করবে রাজারহা-সি।
কী কী সুবিধা রয়েছে এই বিলাসবহুল জাহাজে এছাড়াও কত খরচ পরবে জনপ্রতি? সেই সমস্ত বিষয়ে এম কে শিপিং লাইন্সের মালিক মহম্মদ মাসুম খান বলেন,বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রচুর লোকজন যাতায়াত করে কেউ রেলপথে কেউবা বিমানে আবার কেউবা সড়কপথে (বাসে)। কলকাতায় বিভিন্ন ধরনের মানুষজন যাতায়াত করে। কিন্তু নৌপথে সচরাচর বিদেশি পর্যটকদের যাওয়া হয় না। নৌপথে যাওয়ার প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে আমাদের দুই বাংলার সুন্দরবন।ঢাকা থেকে যারা কলকাতায় আসবে তারা বাংলাদেশের সুন্দরবন দেখতে পাবে একই সাথে পশ্চিমবঙ্গেরও সুন্দরবন দেখতে পাবে। এই পরিষেবাটা চালু ছিল ১৯৭২ সালে। কিন্তু ১৯৭২ সালের পরেই এই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা এই পরিষেবাটা বেসরকারি উদ্যোগে আবার চালু করলাম।
তিনি আরও বলেন, এই পরিষেবাটা চালু করার জন্য ভারত সরকার যথেষ্ট ভাবে আমাদেরকে সাহায্য করেছে।গত মাসে বাংলাদেশ একটা মিটিং ছিল, সেই মিটিংয়ে বাংলাদেশ-ভারত চুক্তি মধ্যমে অনেক কিছু জটিল সমস্যার সমাধান হয়েছে।এই চুক্তির ফলে ইমিগ্রেশন সহজ হয়েছে,এই জাহাজে যারা আসবেন তাদের ভিসা খুব সহজ ব্যাপার। এছাড়াও ভারত সরকার ঘোষণা দিয়েছে এই জাহাজে যারা আসবেন তাদের অনারেবল ভিসা দেওয়া হবে । আশা করি এই নৌপথের যাতায়াতটা খুবই জমজমাট হবে। মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যের বাংলাদেশে থেকে কলকাতায় আসতেও পারবে এবং যেতেও পারবে।
মহম্মদ মাসুম খান আরও জানান, বেসরকারি ভাবে কার্নিভাল ক্রুজ লাইন্স ও ভারতের কনিস্ক শিপিং লাইন্স যৌথ উদ্যোগে এই পরিষেবা চলাচল শুরু হয়ে।যে জাহাজে করে যাতায়াত করা হবে তার নাম রাজারহাট-সি।এই জাহাজে নিচের আন্ডার বোটাম নিয়ে পাঁচটা ফ্লোর আছে। কিন্তু এই মুহূর্তে নিচের ফ্লোর ব্যবহার করছি না। আপাতত আমরা তিনটে ফ্লোর ব্যবহার করছি।
যাতায়াতের জন্য কেমন খরচ পড়বে সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মহম্মদ মাসুম খান বলেন,যারা অল্প খরচে যাতায়াত করতে চায় তাদের জন্য সম্পূর্ণ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাঙ্কার বেডের ব্যবস্থা আছে। আর দোতালায় আমাদের ভিআইপি ও প্রিমিয়াম রুম আছে। কেউ যদি একা থাকতে চান তার জন্য সিঙ্গেল কেবিন ছাড়াও ডবল কেবিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোবাইল চার্জিং ব্যবস্থা করা আছে।খাবারের জন্য উন্নত মানের ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করা আছে। জাহাজের ঠিক পিছনে শরীর চর্চা করার জন্য একটি জিমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খেলাধুলা জন্য জায়গা নির্ধারন করা হয়েছে। সমস্ত রকমের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা আছে এই জাহাজে।
কোন জলপথে থেকে জাহাজ যাতায়ত করবে সেই বিষয়ে বলতে গিয়ে মহম্মদ মাসুম খান জানান,ঢাকা থেকে ছেড়ে চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, কাউখালীত, জিএম চ্যানেল,মঙ্গলা, আংটিহারা, হেমনগর, নামখানা, ডায়মন্ডহাবরা হয়ে কলকাতায় আসা।সুন্দরবনের ভিতরে কোথাও আমাদের এই জাহাজ দাঁড়াবে না। যাত্রীদের মনোরঞ্জনের জন্য জাহাজ দাঁড়ালেও জাহাজের থেকে নামার অনুমতি নেই।তবে সুন্দরবনের ভেতর থেকে যখন জাহাজ যাবে ঠিক সেই সময় জাহাজের গতি আমরা একদম আস্তে করে দিই যাতে যাত্রীরা সুন্দরবনের মনোরম পরিবেশটা উপভোগ করতে পারে। ৩ দিন যেতে লাগবে আর আসতে ৩ দিন,মোট কমপ্লিট প্যাকেজ ৬ দিনের।
এই জাহাজে যাতায়াতের থাকা-খাওয়া নিয়ে সর্বনিম্ন খরচ পরবে একজনের জন্য ১০ হাজার টাকা। সর্বোচ্চ দুই জনের জন্য ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে যেটি কেবিন বেডে।কলকাতা থেকে ঢাকা যেতে ৩ দিন সময় লাগবে। প্রতি মাসের যেযন ফেব্রুয়ারি মাসে এই জাহাজে সিডিউল হচ্ছে,১ থেকে ১৪ এবং ২৯ তারিখ কলকাতা থেকে ছেড়ে যাবে । প্রত্যেক মাসেই শিডিউল পরিবর্তন হবে। সর্বোচ্চ এই জাহাজে ৩০০ জন যাত্রী যেতে পারবে।
“এমভি গঙ্গা বিলাস”ভারতের পাঁচটি রাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে অসমে প্রবেশ করে। এটাই ছিল বিশ্বের সবথেকে লম্বা বিলাসবহুল ক্রুজ যাত্রা।”এমভি গঙ্গা বিলাস”বিপুল খরচের জন্য
সাধারণ পর্যটকদের নাগালের বাইরে। কিন্তু রাজারহাট-সি জাহাজে ভাড়া কম থাকায় দুই বাংলার পর্যটকেরা জলপথে সুন্দরবনের স্বাদ নিতে পারবেন ও যাতায়াত করতে পারবেন।
বিস্তারিত দেখুন এবং MV রাজারহাট সি ক্রুজ: এক অদৃশ্য ভ্রমণের মজা নিন!