spot_img
29.2 C
Kolkata
Sunday, June 1, 2025
spot_img

বাংলাদেশের কোটা আন্দোলন: ‘আশ্রয়’ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাল্টা নিশানা মমতার; ‘আমাকে শেখানোর প্রয়োজন নেই !

 

কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :ll

কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অশান্তির প্রেক্ষিতে সেদেশের শরণার্থীদের ‘আশ্রয়’ দেওয়া প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। গত ২১ জুলাই মমতা জানিয়েছিলেন ‘আমি বাংলাদেশ নিয়ে কোনো কথা বলতে পারি না, কারণ ওটা একটা আলাদা দেশ। যা বলার ভারত সরকার বলবে। কিন্তু এটুকু আমি বলতে পারি যে, যদি কোন অসহায় মানুষ বাংলায় দরজা খটখট করে আমরা তাদের নিশ্চয়ই আশ্রয় দেবো। তার কারণ এটা জাতিসংঘের প্রস্তাবেও আছে যে, কেউ যদি শরণার্থী (রিফিউজি) হয়ে যায় তাকে পাশের রাজ্য (রাষ্ট্র) তাকে সম্মান জানাবে।’

বাংলাদেশ নিয়ে ওই মন্তব্যের পরেই একদিকে যেমন বিভ্রান্তি ছড়ায় তেমনি ঘরে বাইরে প্রচন্ড চাপে পড়ে মমতা ব্যানার্জি। মমতার ওই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে বিজেপি নেতা ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ’এর অভিমত ‘অনুপ্রবেশকে বৈধতা দিতে চাইছেন মমতা।’

বাংলাদেশ নিয়ে মমতার ওই মন্তব্যে রিপোর্ট তলব করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।

অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের তরফেও ওই মন্তব্যের বিরোধিতা করা হয়। এমনকি ভারতকে ডিপ্লোম্যাটিক নোটও পাঠিয়েছিল শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মামুদ এই বিষয়টি উত্থাপন করে বলেছিলেন ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে, যার সঙ্গে আমাদের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে…। আমরা এটা পরিষ্কার করতে চাই যে তার মন্তব্যে বিভ্রান্তির অনেক সুযোগ রয়েছে। তাই আমরা ভারত সরকারকে একটা নোট দিয়েছি।’

বাংলাদেশের তরফে সরকারিভাবে কূটনৈতিক নোট পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে ভারত সরকারও। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রশাসনিক প্রধান মমতা ব্যানার্জিকে কার্যত কড়া বার্তা দিয়ে সংবিধানের পাঠ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় পররাষ্ট্র বিষয় নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কোন অধিকার রাজ্য সরকারের নেই।

বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে কূটনৈতিক নোট পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করার পাশাপাশি এই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেয় ভারত সরকার।

বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়ে দেন ‘ভারতীয় সংবিধানের সপ্তম তফসিলের প্রথম তালিকার অন্তর্গত ১০ নম্বর অনুচ্ছেদে পরিষ্কারভাবে বলা আছে যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত যেকোনো বিষয়- যেখানে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কযুক্ত- সেখানে কোন সিদ্ধান্ত নিতে নেওয়ার ক্ষেত্রে একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্রাধিকার রয়েছে। এই বিষয়টি যৌথ তালিকায় নেই এবং রাজ্যের তালিকাতেও নেই। আমাদের অবস্থানটা স্পষ্ট। সাংবিধানিক এক্তিয়ারের বাইরের কোনো বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকার কোনভাবেই হস্তক্ষেপ করতে পারে না।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এও জানান ‘বাংলাদেশের সাথে আমাদের উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ভারত মনে করে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি সেটা তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়। নিকটতম প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে আমরা মনে করি খুব শিগগিরি বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মন্তব্যের পরে এবার পাল্টা নিশানা করেছেন মমতা ব্যানার্জি। নীতি আয়োগ বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবার দিল্লিতে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই গণমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে মমতা ব্যানার্জিকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ‘আমি দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় অবকাঠামোটা খুব ভালভাবে জানি। আমি সাতবার সাংসদ ছিলাম, দুইবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। আমি অন্য অনেকের চেয়ে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতি সম্পর্কে ভাল জানি। তাদের আমাকে শিক্ষা দেওয়ার দরকার নেই। বরং তাদের এই সিস্টেমটা জানা উচিত। আমি যেটা বলেছিলাম সেটা মানবিকতার দিকটি বিবেচনা করে বলেছিলাম |

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,300SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks