কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
নতুন দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক পদদলিত ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু ও বহু আহত হওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকার নতুন জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই পরিকল্পনার আওতায় ৬০টি ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশনে স্থায়ী হোল্ডিং জোন তৈরি করা হবে এবং ভিড় ও সংকট মোকাবিলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
ভিড় নিয়ন্ত্রণে নতুন ব্যবস্থা
🚉 স্থায়ী হোল্ডিং জোন:
উচ্চ জনসমাগম প্রবণ রেলস্টেশনগুলিতে নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা হবে যেখানে অতিরিক্ত যাত্রীদের সাময়িকভাবে অপেক্ষা করতে বলা হবে। এর ফলে যাত্রীদের চলাচলে শৃঙ্খলা আসবে এবং স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম বা প্রবেশপথে অতিরিক্ত ভিড় জমে ওঠার সম্ভাবনা কমবে।
🧑✈️ প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি:
স্থানীয় রেল কর্মকর্তাদের সংকটকালীন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাতে তারা দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং যাত্রীদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন।
🚦 দিকনির্দেশক ব্যবস্থা:
স্টেশনগুলিতে নির্দেশিকা দেওয়ার জন্য তীর চিহ্ন ও বিভাজক (separators) বসানো হবে যা যাত্রীদের নির্ধারিত হোল্ডিং এলাকায় পৌঁছাতে সহায়তা করবে।
🖥️ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ব্যবহার:
জনসমাগম নিয়ন্ত্রণের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-ভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থা চালু করা হবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে যাত্রীদের চলাচলের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং কোনও স্টেশনে অতিরিক্ত ভিড় জমতে থাকলে আগে থেকেই সতর্ক সংকেত পাঠানো হবে।
মহাকুম্ভ ও রেল ব্যবস্থাপনা
এই বছর মহাকুম্ভ মেলায় অংশ নিতে হাজার হাজার ভক্ত ভারতজুড়ে বিভিন্ন স্টেশন থেকে প্রয়াগরাজের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন। দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে হঠাৎ অতিরিক্ত যাত্রীদের চাপে পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটে, যেখানে ১৮ জনের মৃত্যু হয়।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—
📍 ৩৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনকে সরাসরি মনিটরিং করা হবে, যা প্রয়াগরাজের সঙ্গে সংযুক্ত।
📍 এই স্টেশনগুলোর কার্যক্রম কেন্দ্রীয় ওয়ার রুমের মাধ্যমে নজরদারির আওতায় আনা হবে।
নিরাপত্তা ও যাত্রী সুরক্ষায় আরও পদক্ষেপ
✅ রেল স্টেশনগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে সংকটকালে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
✅ জনসাধারণকে বিভিন্ন ভাষায় অ্যানাউন্সমেন্ট ও ডিজিটাল সাইনবোর্ডের মাধ্যমে সতর্ক করা হবে।
✅ ট্রেন বিলম্ব হলে বা প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তন হলে স্বয়ংক্রিয় আপডেট সিস্টেম চালু করা হবে।
সতর্কতা এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
নতুন এই পদক্ষেপগুলি রেলওয়ে স্টেশনগুলোর ভিড় নিয়ন্ত্রণ, জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং যাত্রীদের সুরক্ষিত যাত্রা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে বড় ধর্মীয় সমাবেশ বা উৎসবের সময় এই প্রযুক্তিগুলোর কার্যকারিতা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
সরকার আশা করছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে এবং রেল পরিষেবা আরও উন্নত হবে।