কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
শান্তিনিকেতন: এবছর শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনে পালিত হবে না আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। সংস্কারের কাজ চলার কারণে আগামীকাল, ২১ ফেব্রুয়ারি, এই ঐতিহ্যবাহী দিনটি উদযাপন করা হবে ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় সংহতি ভবনে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতৃক্ত ঘোষ আজ সকালে একটি আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এতে তিনি জানান, অন্যান্য বছরের মতোই যথাযোগ্য মর্যাদায় ইউনেস্কো ঘোষিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হবে। তবে এবছর শোভাযাত্রার গন্তব্য পরিবর্তন করা হয়েছে। সকাল সাড়ে আটটায় আন্তর্জাতিক অতিথি নিবাসের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে বাংলাদেশ ভবনের পরিবর্তে ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় সংহতি কেন্দ্রে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রার সময় রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশিত হবে।
অন্যদিকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এই স্থান পরিবর্তনের কারণ হিসেবে সংস্কারকাজের কথা উল্লেখ করলেও, অনেকেই মনে করছেন নিরাপত্তাজনিত কারণও এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানে ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়। ওপার বাংলায় সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন ও মূর্তি ভাঙচুরের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ফলে, কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
তবে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তাদের দাবি, একমাত্র সংস্কারকাজের কারণেই এবছর বাংলাদেশ ভবনে অনুষ্ঠান করা সম্ভব হচ্ছে না।
একইসাথে ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় সংহতি ভবনে মূল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি অন্যান্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কবিতা আবৃত্তি, সংগীত পরিবেশনা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।
তবে বিগত বছরগুলোর মতো বাংলাদেশ ভবনে সন্ধ্যার সময় যে বিশেষ অনুষ্ঠান হত, সেটি এবছর বাতিল করা হয়েছে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, ভবনের সংস্কারকাজের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্বভারতীর এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। সংস্কৃতি ও ভাষার সংযোগস্থল হিসেবে পরিচিত বিশ্বভারতীর এই সিদ্ধান্তের বাস্তব কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এ বছর স্থানান্তরিত হলেও মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকবে।