কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
বিস্তারিত দেখুন :
কলকাতার আহিরিটোলা ঘাটে ঘটল এক নৃশংস ঘটনা—সুটকেসে ভরা মৃতদেহ ফেলে দেওয়ার সময় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়লেন দুই মহিলা। অভিযোগ, এক মহিলার দেহ তিন টুকরো করে একটি সুটকেসে ভরে নদীতে ফেলতে গিয়েছিলেন তারা। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে আসতেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে এবং সঙ্গে সঙ্গেই দুই মহিলাকে আটক করা হয়।
এই ঘটনায় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত দুই মহিলার নাম ফাল্গুনী ঘোষ এবং আরতী ঘোষ, যারা সম্পর্কে মা-মেয়ে। তাদের কাছ থেকে একটি ট্রেনের টিকিট পাওয়া গেছে, যা কাজীপাড়া স্টেশন থেকে শিয়ালদহ হয়ে হাসনাবাদ লাইনে যাত্রার ইঙ্গিত দেয়। সন্দেহ করা হচ্ছে, তারা ট্রেনে করেই মধ্যমগ্রাম থেকে শিয়ালদহ পৌঁছান এবং সেখান থেকে একটি অ্যাপ-ক্যাব বুক করে বিভিন্ন ঘাটে ঘুরতে থাকেন, শেষ পর্যন্ত আহিরিটোলা ঘাটে এসে দেহ ফেলতে যান।
পুলিশ সুত্রে জানা যায় মৃত মহিলার নাম সুস্মিতা ঘোষ, তিনি ফাল্গুনী ঘোষের আত্মীয় হন। পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, সুস্মিতা ঘোষ ফাল্গুনী ঘোষের পিসি শাশুড়ি। সন্দেহ করা হচ্ছে, মধ্যমগ্রামেই খুনের ঘটনা ঘটে এবং পরে দেহ লুকানোর পরিকল্পনা করা হয়।
এ বিষয় পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মধ্যমগ্রামের বাড়িতেই সুস্মিতা ঘোষকে খুন করা হয়। হত্যার পদ্ধতি এখনও স্পষ্ট নয়, তবে দেহটি তিন টুকরো করা হয়েছে, যা ঘটনার নৃশংসতার প্রমাণ দেয়।
পরিকল্পিতভাবে দেহ লুকানোর ছক:
• গভীর রাতে ট্রলিব্যাগে মৃতদেহ ভরে তারা শিয়ালদহ আসে।
• এরপর একটি ক্যাব বুক করে বিভিন্ন ঘাটে ঘুরতে থাকে।
• আহিরিটোলা ঘাটে দেহ ফেলতে গেলে স্থানীয়দের নজরে আসে।
• সন্দেহজনক আচরণ দেখে স্থানীয়রা তাদের আটক করে।
• পুলিশ এসে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করে।
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি (ক্রাইম) রুপেশ কুমার ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।
তদন্তকারীরা নর্থ পোর্ট থানায় দুই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পাসাপসী এখন পুলিশের তদন্তে যে প্রশ্ন উঠে আসছে
1. খুনের কারণ কী? পারিবারিক বিবাদ নাকি অন্য কোনো কারণ?
2. অন্য কেউ যুক্ত রয়েছে কি না? আরও কেউ এই অপরাধে সহায়তা করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
3. মৃত্যুর সঠিক সময় ও খুনের পদ্ধতি কী? ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আহিরিটোলা ঘাটে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা দুই মহিলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়।জদেও পুলিশ ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
ধৃত দুই মহিলাকে শনিবার আদালতে তোলা হবে এবং পুলিশ তাদের রিমান্ডের আবেদন করতে পারে।
তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে এবং পুলিশ আশাবাদী, শীঘ্রই এই ঘটনার আসল রহস্য উন্মোচিত হবে।
কলকাতায় এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও দেহ গুমের ঘটনা বিরল। মধ্যমগ্রাম থেকে আহিরিটোলা পর্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেহ সরিয়ে নিয়ে আসার পদ্ধতি পুলিশের নজরে এসেছে। তবে পুলিশের তৎপরতায় অভিযুক্তরা ধরা পড়েছে, এখন দেখার বিষয় তদন্তের মাধ্যমে পুরো ঘটনা কীভাবে সামনে আসে।