কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
পশ্চিমবঙ্গে সিপিআই(এম)-এর ২৭তম রাজ্য সম্মেলন থেকে সর্বসম্মতিক্রমে গঠিত হলো ৮০ সদস্যের নতুন রাজ্য কমিটি। এই নতুন কমিটিতে ১৪ জন মহিলা সদস্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, যা দলীয় পরিকাঠামোয় নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির প্রতিফলন।
অন্যদিকে রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হলেন মহম্মদ সেলিম ,রাজ্য কমিটির প্রথম বৈঠকে সদস্যদের সম্মতিতেই পুনরায় রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হলেন মহম্মদ সেলিম। দীর্ঘদিন ধরে বামপন্থী রাজনীতির অন্যতম মুখ তিনি। পূর্বতন কমিটির নেতৃত্বে থেকেও তিনি দলের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
পাসাপসী এই সম্মেলন রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যখন পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট নিজেদের সংগঠন পুনর্গঠনের চেষ্টায় রয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি দ্বিমুখী লড়াইয়ে ব্যস্ত, সেখানে সিপিআই(এম) তার পুরনো শক্তি পুনরুদ্ধার করতে চাইছে।
একই সাথে রাজ্য সম্মেলনে দলীয় কর্মসূচি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। নতুন কমিটি বিশেষভাবে কয়েকটি বিষয়ে জোর দিতে চলেছে—
1. তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে বিকল্প রাজনৈতিক মডেল গঠন: পশ্চিমবঙ্গে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী বিজেপির বিরুদ্ধে নতুন রাজনৈতিক দিশা তৈরি করতে চায় সিপিআই(এম)।
2. গণআন্দোলনের জোরদারকরণ: বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, কৃষক সমস্যা এবং শিল্পায়ন নিয়ে জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলতে দল পরিকল্পনা নিয়েছে।
3. সংগঠনের পুনর্গঠন: গত কয়েক বছরে দুর্বল হয়ে পড়া পার্টি সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করাই নতুন কমিটির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
4. নারী ও যুব সংগঠনের শক্তিবৃদ্ধি: নতুন কমিটিতে ১৪ জন মহিলা অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে স্পষ্ট যে দল নারী নেতৃত্বকে আরও এগিয়ে আনতে চায়। এছাড়া, যুব সমাজের মধ্যে দলের ভিত্তি আরও মজবুত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
উল্লেখ ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন এবং ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সিপিআই(এম)-এর ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেস, অন্যদিকে বিজেপি যখন পশ্চিমবঙ্গে প্রধান শক্তি হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, তখন বামফ্রন্ট নিজের জায়গা কতটা পুনরুদ্ধার করতে পারবে, তা দেখার বিষয়।
তবে, নতুন নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সিপিআই(এম) এক নতুন যুগে প্রবেশের সংকেত দিচ্ছে। মহম্মদ সেলিমের নেতৃত্বে দলের ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা সময়ই বলবে।