spot_img
35.7 C
Kolkata
Friday, June 13, 2025
spot_img

নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই কামতাপুর রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবি ফের শীর্ষে !

কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :

এক সময় কোচবিহারের রাজত্ব ছিল কিংবদন্তি। তবে প্রকৃতির নিয়মে কোচবিহার ভারতবর্ষ এবং পশ্চিমবঙ্গের অংশ হয়ে যায়, আর রাজশক্তির অবসান ঘটে। এরপর নানা সময়ে কোচবিহার ও নিম্ন আসামের বিভিন্ন অঞ্চলে কামতাপুর রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল। সম্প্রতি, কামতাপুর রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবিতে ইউনাইটেড কামতাপুর স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন (ইউকেএসও) এবং রাজবংশী জনগণের একত্রিত উদ্যোগে প্রথম কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয় অসমের হালাকুড়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। কোচবিহার রাজ পরিবারের উত্তরাধিকারী কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন অসমের গৌরীপুর রাজ পরিবারের সদস্যসহ কোচবিহার রাজ পরিবারের সদস্য এবং কামতাপুর আন্দোলনের সাথে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

এপর্যন্ত, কামতাপুর আন্দোলন ছিল কিছুটা বিচ্ছিন্ন। তবে এবার, কোচবিহার এবং অসম রাজ পরিবারের সদস্যরা সরাসরি কামতাপুর রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবিতে এগিয়ে আসেন। কোচবিহার রাজ পরিবারের উত্তরাধিকারী কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতি কুমার জিতেন্দ্র নারায়ণ জানান, “কামতাপুর রাজ্য শুধু উত্তরবঙ্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর সঙ্গে নিম্ন আসামের গোয়ালপাড়া, ধুবড়ি, কোঁকড়াঝাড়, এবং বঙ্গাইগাঁওয়ের কোচ সম্প্রদায়ের মানুষেরাও যুক্ত। তাঁরা সবাই কামতাপুর রাজ্য চান।”

তিনি আরও বলেন, “উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সংগঠনগুলো এবং গৌরীপুর রাজ পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে আমরা এবার এই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করব।”

এ বিষয়ে গৌরীপুর রাজ পরিবারের সদস্য প্রদীপ কুমার বড়ুয়া বলেন, “অসমের রাজ পরিবার তাদের দাবি পূরণ করেছে, তবে কামতাপুর আমাদের অধিকার। আমাদের সংস্কৃতি, শিল্প, এবং রাজবংশী জনগণের অধিকার এখনো অমীমাংসিত। কোচবিহারের মহারাজা যখন চুক্তি করেছিলেন, তখন বলা হয়েছিল কোচবিহারকে গ্রেড-জি রাজ্য হিসেবে দেওয়া হবে, কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি।”

এতদিনের আন্দোলন ছিল কিছুটা সীমাবদ্ধ, কিন্তু এখন থেকে গৌরীপুর ও কোচবিহারের রাজ পরিবারের সদস্যদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই আন্দোলন তীব্র হবে, জানালেন প্রদীপ কুমার বড়ুয়া। তিনি বলেন, “আমরা কামতাপুর রাজ্য ফিরে পেতে চাই।”

এদিকে, কোচবিহার তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন মন্তব্য করেন, “নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই রাজ্য ভাগের দাবি সামনে আসে। যারা নিজেদের কোচবিহারের রাজ পরিবারের সদস্য দাবি করছেন, তারা আসল বংশধর নন। উত্তরবঙ্গের মানুষ কখনো আলাদা রাজ্যের পক্ষে নয়, এগুলো শুধুই কল্পনা।”

তিনি আরও বলেন, “জিতেন্দ্র বাবু বিজেপির সদস্য, এবং বিজেপি চাইছে না যে, আসল মহারাজদের পুনর্বাসিত করা হোক। এই আন্দোলন আসলে বিজেপির চক্রান্ত।”

কোচবিহারের নবনির্বাচিত বিজেপি সভাপতি অভিজিৎ বর্মন জানান, “গিরীন্দ্র বাবু কী বলেছেন সে বিষয়ে আমার জানা নেই, তবে কনভেনশন তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। বিজেপির কোনো সম্পর্ক এখানে নেই।”

এ প্রসঙ্গে, কোচবিহারের রাজ্যসভার সাংসদ তথা জিসিপিএ সুপ্রিমো অনন্ত মহারাজ বলেন, “এটা একটি গণতান্ত্রিক দেশ, এবং সকলের আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে।”

কোচবিহারে এর আগে বারবার আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে, এবং বর্তমানে কোচবিহারের রাজনীতি আবার উত্তাল। চলতি বছর, কোচবিহার রয়্যাল ফ্যামিলি সাকসেসর্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরেছে। আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই, আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে কোচবিহারের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হতে চলেছে।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,400SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks