কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
বালুরঘাট: দক্ষিণ দিনাজপুরের নাট্যজগতে নেমে এল শোকের ছায়া। প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব ও বঙ্গরত্ন সম্মানপ্রাপ্ত হরিমাধব মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
১৯৪১ সালে জন্মগ্রহণ করা হরিমাধব মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরেই বালুরঘাট পেয়েছিল ‘ত্রিতীর্থ’ নাট্যদল। বাংলা নাট্যমঞ্চে তাঁর অসামান্য অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ‘দেবীগর্জন’, ‘জল’, ‘গ্যালিলিও’, ‘দেবাংশী’র মতো কালজয়ী নাটকের নির্দেশক ছিলেন তিনি। নাট্যজগতের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। দীর্ঘ ৩৪ বছর তিনি বালুরঘাট কলেজে অধ্যাপনা করেছেন এবং বহু ছাত্রছাত্রীর জীবনে আলোকবর্তিকা হয়ে থেকেছেন। তাঁর নাট্যচর্চার স্বীকৃতিস্বরূপ পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ‘বঙ্গরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করে।
শেষ বিদায়ে জনস্রোত
মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর মরদেহ বালুরঘাটে পৌঁছালে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় জমায় অসংখ্য নাট্যপ্রেমী, ছাত্রছাত্রী ও অনুরাগীরা। প্রথমে তাঁর বাসভবনে, এরপর বালুরঘাট কলেজ ও ‘ত্রিতীর্থ’ নাট্যদলে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে খিদিরপুর মহাশ্মশানে সম্পন্ন হয় তাঁর শেষকৃত্য।
হরিমাধব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ জেলার নাট্যজগৎ। এক নাট্যকর্মীর কথায়, “তিনি ছিলেন আমাদের পথপ্রদর্শক। নাটকের আলো নিভে গেলেও তাঁর সৃষ্টি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
প্রদোষ মিত্র, বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব, বলেন:
“হরিমাধবদার চলে যাওয়া নাট্যজগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর নির্দেশনায় আমরা যেভাবে নাটক শিখেছি, তা আজীবন মনে থাকবে।”
অশোক মিত্র, চেয়ারম্যান, বালুরঘাট পৌরসভা, বলেন:
“তিনি শুধু নাট্যব্যক্তিত্ব ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক আদর্শ শিক্ষক। তাঁর চলে যাওয়া বালুরঘাটের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের জন্য এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি করল।”
হরিমাধব মুখোপাধ্যায়ের অবদান ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নাট্যকর্মীদের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তাঁর শিষ্যরা আজও তাঁর দেখানো পথে এগিয়ে চলেছে, যা তাঁর স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে।