কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
শিলিগুড়ির উত্তরকন্যার কাছে এক জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল ফুলবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের শান্তিপাড়া এলাকার এক নাবালিকা মেয়ের দেহ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পরিবার ও স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নিহত নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, প্রথমে তাঁকে ধর্ষণ করা হয় এবং পরে হত্যা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ দুইজন সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে নাবালিকা দিয়া তার বন্ধুদের সঙ্গে তিনবট্টি মোড়ে বিরিয়ানি খেতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। কিন্তু অনেকক্ষণ কেটে গেলেও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাঁকে খুঁজতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর নাবালিকার বন্ধু রোহিত পরিবারকে ফোন করে জানায় যে দিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পরিবার দ্রুত নাবালিকাকে উদ্ধার করে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। রোহিতের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উত্তরকন্যার কাছে একটি জঙ্গলে নাবালিকার নিথর দেহ পাওয়া যায়। সন্দেহজনক পরিস্থিতির কারণে পুলিশ রোহিত ও আরও এক নাবালককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
বুধবার বিকেলে ফরেনসিক টিমের একটি দল অভিযুক্ত প্রেমিক রোহিত রায়ের বাড়িতে পৌঁছায়। শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি থানার অন্তর্গত জ্যোতির্ময় কলোনিতে তাঁর বাড়িতে নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং বাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, এই বাড়িতেই নাবালিকাকে খুন করা হয়েছে। তবে ফরেনসিক দল কোনো নির্দিষ্ট মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এই ঘটনার পর, বুধবার বিজেপি মহিলা মোর্চার তরফে থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় এবং পরে পথ অবরোধ করা হয়। তাঁদের দাবি, অভিযুক্তদের দ্রুত কঠোর শাস্তি দিতে হবে এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।
এছাড়া, ডি ওয়াই এফ আই দার্জিলিং জেলা কমিটি দোষীদের শাস্তির দাবিতে এনজেপি থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায়। সংগঠনের সদস্যরা থানার গেটে বসে প্রতিবাদ করেন এবং পরে আইসি সুনম লামার হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন।
ডি ওয়াই এফ আই এর যুগ্ম সম্পাদক সাগর শর্মা জানান, অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে অপরাধীরা পুলিশের ভয় পায় এবং অপরাধমূলক কাজ থেকে বিরত থাকে।
এই ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য পুলিশ ও ফরেনসিক টিম যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন ও হত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, তদন্ত কতদূর গড়ায় এবং প্রকৃত অপরাধীরা কতটা কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হয়।