কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর জেলার একটি বেসরকারি স্কুলে ১৩ বছর বয়সী এক দলিত ছাত্রীকে মাসিক শুরু হওয়ায় শ্রেণিকক্ষে বসতে না দিয়ে সিঁড়ির পাশে বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগে দেশজুড়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রীটি অরুণথাথিয়ার সম্প্রদায়ের সদস্য এবং অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ঘটনাটি ঘটে সেঙ্গুট্টাইপালায়ম গ্রামের একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বুধবার ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ওই ছাত্রী সিঁড়িতে বসে পরীক্ষার খাতা লিখছে, তার সহপাঠীরা শ্রেণিকক্ষে রয়েছে। ভিডিওটি ছাত্রীর মা তুলেছেন বলে জানা গেছে। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, “যদি কারও মাসিক শুরু হয়, তার মানে কি সে আর শ্রেণিকক্ষে বসে পরীক্ষা দিতে পারবে না? রাস্তার ধারে বসে পরীক্ষা দিতে হবে?”
ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে এবং শিক্ষাদপ্তর তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ছাত্রীটি ৫ এপ্রিল প্রথমবারের মতো মাসিক শুরু করে। ৭ এপ্রিল তার বিজ্ঞান পরীক্ষা এবং ৯ এপ্রিল সমাজ বিজ্ঞান পরীক্ষা হয়। দুটি পরীক্ষাই সে সিঁড়িতে বসে দিয়েছে।
ছাত্রীটির মা প্রথমে একটি আলাদা বসার ব্যবস্থার অনুরোধ করেছিলেন বলে পুলিশ ও শিক্ষাবিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “মা ভেবেছিলেন, মেয়ের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু তিনি যখন দেখেন মেয়ে একটি ডেস্ক বা চেয়ারের ব্যবস্থা ছাড়াই মাটিতে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে, তখন তিনি মর্মাহত হন।”
স্কুলের দাবি, মায়ের অনুরোধেই আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তবে যেভাবে মানবিকতা এবং সম্মানের ঘাটতি দেখা গেছে, তা উদ্বেগজনক। ঘটনাটি নিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশও জারি করা হয়েছে।
ঘটনাটি পিরিয়ড নিয়ে সামাজিক কুসংস্কার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সচেতনতার অভাবের গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে—বিশেষ করে দলিত ও প্রান্তিক সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে।
স্থানীয় সমাজকর্মী ও রাজনৈতিক নেতারা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং স্কুল শিক্ষকদের মধ্যে মাসিক নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন।