কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
নিউ ইয়র্ক সিটির বিখ্যাত হাডসন নদীতে এক পর্যটক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সিমেন্স স্পেন-এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও আগুস্তিন এস্কোবার, তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান এবং হেলিকপ্টারের পাইলট।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে ঘটে। দুর্ঘটনার দৃশ্যের ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে—হেলিকপ্টারের পিছনের অংশ (টেইল) ও রোটর মূল কাঠামো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যাওয়ার মুহূর্ত।
এক প্রত্যক্ষদর্শী ব্রুস ওয়াল জানান,“আমি স্পষ্ট দেখেছি হেলিকপ্টারটি মাঝ আকাশে ভেঙে পড়ছে। পিছনের অংশ ও প্রপেলারের অংশ আলাদা হয়ে যায়। প্রপেলার তখনও ঘুরছিল, কিন্তু হেলিকপ্টারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে যায়।”
দুর্ঘটনার পরপরই জরুরি উদ্ধারকারী নৌযান ও পুলিশ বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ছয়জনের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও তারা পরে মারা যান।
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস সংবাদমাধ্যমকে জানান,
“এটি এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা। ছয়জনকেই পানি থেকে তোলা হয়েছে এবং দুঃখজনকভাবে তারা সবাই মারা গেছেন।”
হেলিকপ্টারটি ছিল বেল ২০৬ মডেলের, যা পরিচালিত হচ্ছিল নিউ ইয়র্ক হেলিকপ্টার ট্যুরস কর্তৃক। এটি বিকেল ৩টা নাগাদ ম্যানহাটনের ডাউনটাউন এলাকা থেকে উড্ডয়ন করে এবং জর্জ ওয়াশিংটন ব্রিজ অবধি উত্তর দিকে উড়ে যায়। সেখান থেকে দক্ষিণে ঘুরে কয়েক মিনিটের মধ্যেই হাডসন নদীর উপর আকাশে উল্টে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হেলিকপ্টারটি মাঝ আকাশে বিস্ফোরণ বা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ভেঙে পড়ে।
দুর্ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম “Truth”-এ লেখেন,“হাডসন নদীতে ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা। ছয়জন – পাইলট, দুই প্রাপ্তবয়স্ক ও তিন শিশু – আর আমাদের মধ্যে নেই। দৃশ্যগুলো অত্যন্ত মর্মান্তিক। ঈশ্বর যেন মৃতদের পরিবার ও বন্ধুদের সহায় হন। পরিবহন সচিব শন ডাফি এবং তাঁর টিম ইতিমধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে শিগগিরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে ।”
উল্লেখ এই নদীতে এর আগেও ঘটেছে একাধিক বিমান দুর্ঘটনা। ২০০৯ সালে, এক ছোট প্লেন ও পর্যটক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে ৯ জন নিহত হয়। আবার ২০১৮ সালে, ইস্ট রিভারে একটি ওপেন-ডোর হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়।
এখনও এই দুর্ঘটনার কারণ নির্ধারণে জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড (NTSB) এবং ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে। হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ, ফ্লাইট ডেটা ও ভিডিও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। উদ্ধার তৎপরতাও চলছে।