কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্ধকার ছায়ায় যখন পৃথিবী ধুঁকছে মৃত্যু ও অনিশ্চয়তার আতঙ্কে, ঠিক তখনই এক আলোকরেখা হয়ে জন্ম নিয়েছিল এক অপূর্ব প্রেমকাহিনি—ভারতীয় যুবক কৃষ্ণেন্দু ও অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান তরুণী রিনা ব্রাউনের মধ্যেকার সম্পর্কের সেই অনবদ্য উপাখ্যান রূপ পেয়েছিল তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস সপ্তপদী-তে।
পরবর্তীতে, ১৯৬১ সালে পরিচালক অজয় কর তাঁর দক্ষ পরিচালনায় এই উপন্যাসকে রূপ দেন এক কালজয়ী চলচ্চিত্রে, যেখানে মহানায়ক উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেনের রসায়ন বাঙালির চেতনায় স্থায়ী আসন গেঁথে দেয়।
এই বছর, একদিকে মহানায়ক উত্তম কুমারের প্রাক জন্মশতবর্ষ, অন্যদিকে কিংবদন্তি পরিচালক অজয় করের জন্মশতবর্ষ। এই দুই মহীরুহের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে নাট্যশাস্ত্রম নিবেদিত ট্রাইকালার প্রোডাকশন প্রযোজিত, এক নতুন আলোকে মঞ্চে ফিরছে সপ্তপদী—এক ভিন্ন ব্যঞ্জনায়, এক ভিন্ন ব্যাখ্যায়।
নাটকটির মঞ্চায়ন হবে আগামী ১৩ই এপ্রিল, ২০২৫, কলকাতার সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র একাডেমি অফ ফাইন আর্টস-এ। নির্দেশনার ভারে রয়েছেন খ্যাতনামা নাট্যকার উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, যিনি তার সংবেদনশীল ও মর্মস্পর্শী রূপান্তরের মাধ্যমে উপন্যাসের আত্মাকে রক্ষা করে এনেছেন এক নবতর প্রাণবন্ততা।
রিনা ব্রাউনের ভূমিকায় মঞ্চে দেখা যাবে জনপ্রিয় অভিনেত্রী পায়েল সরকার-কে, আর কৃষ্ণেন্দুর ভূমিকায় অভিনয় করবেন উদীয়মান শিল্পী দীপ ভট্টাচার্য্য।
তাঁদের সঙ্গে মঞ্চে থাকবেন বিশিষ্ট নাট্যশিল্পীরা—দুলাল লাহিড়ী, দোলন রায়, নদী রায়, অর্পিতা কাজী, অঙ্কন ধর, কৌশিক ভট্টাচার্য্য, অর্পিতা নন্দী, প্রসূন ভট্টাচার্য্য, সৈকত গাঙ্গুলী, সুমন দাস, অমিত বিশ্বাস এবং অর্পণ ভট্টাচার্য্য।
নাট্যপরিচালক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বললেন, “সপ্তপদী শুধু প্রেম নয়—এ এক যুগের অভিঘাত, সংস্কৃতির সংঘাত, এবং ভালোবাসার অবিনাশী প্রতীক। এই নাটক আজকের দর্শককেও সেই অতীতের প্রেম ও বিসর্জনের সঙ্গে সংযোগ ঘটাবে।”
নাটকটির মঞ্চরূপ শুধু একটি প্রযোজনা নয়, বরং এক অনুশীলন—ভালোবাসাকে উপলব্ধি করার, স্মৃতির আবরণে মোড়া এক হারানো সময়কে নতুন করে ছুঁয়ে দেখার।