কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : নিজস্ব সংবাদদাতা:
উত্তর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবল বজ্রঝড় ও ধূলিঝড়ের কারণে বিমান পরিষেবায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চলাচলকারী অন্তত ৫০টিরও বেশি ঘরোয়া উড়ান বিলম্বিত হয়েছে, প্রায় ২৫টি ফ্লাইট অন্যত্র ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সাতটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, আবহাওয়ার খারাপ অবস্থার কারণে দিল্লি সহ উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় ফ্লাইট পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় দিল্লি ও আশেপাশের অঞ্চলে ধুলোর ঝড় শুরু হয়, যার প্রভাব পড়ে বিমান চলাচলের উপর।
শুক্রবার এয়ার ইন্ডিয়া একটি আনুষ্ঠানিক ট্রাভেল অ্যাডভাইসরি জারি করে যাত্রীদের বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে ফ্লাইটের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিতে অনুরোধ জানায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,
“দিল্লিতে প্রবল ধূলিঝড় এবং বাতাসের কারণে কিছু ফ্লাইট বিলম্বিত বা অন্যত্র ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে আমাদের সামগ্রিক ফ্লাইট সময়সূচি প্রভাবিত হতে পারে। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি এবং যাত্রীদের অসুবিধা যতটা সম্ভব কমানোর চেষ্টা করছি।”
শুধু দিল্লি নয়, উত্তর ভারতের আরও কয়েকটি শহর থেকেও একই ধরনের আবহাওয়ার কারণে বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে যাত্রীদের অভিজ্ঞতা অত্যন্ত হতাশাজনক হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক পোস্টে যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ফ্লাইট সংক্রান্ত কোনও আপডেট দেওয়া হয়নি, বোর্ডিং গেট সম্পর্কেও সঠিক তথ্য মেলেনি, এবং বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার কোনও কর্মী ছিলেন না সাহায্যের জন্য।
একজন যাত্রী এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এ ক্ষোভ উগরে দিয়ে লেখেন:
“১২ই এপ্রিল AI 2705 (দিল্লি থেকে কলকাতা) ফ্লাইটে বিলম্ব হওয়ার সময় যাত্রীদের উদ্বেগকে ‘ভাণ্ডারা’ বলে কটাক্ষ করলেন এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মী কৃষ্ণ কান্ত শর্মা। এটা কি ধরনের ব্যবহার? আমরা কি সম্মান পাওয়ার যোগ্য নই?”
আরেকজন যাত্রী বলেন,
“AI 2725 সকাল ৮টায় ছাড়ার কথা ছিল, এখন পর্যন্ত কোনও আপডেট নেই—না ডিসপ্লেতে, না কোনও কর্মচারীর কাছ থেকে। এটা কেমন পরিষেবা?”
AI 2651 ফ্লাইট নিয়ে আরেকজন লেখেন,
“@airindia কী হচ্ছে এটা? সকাল ৮টার ফ্লাইট, অথচ এখনও পর্যন্ত গেটের কোনও ঘোষণা নেই। দায়িত্ব কে নেবে?”
দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনাল ৩-এ যাত্রীরা চরম বিশৃঙ্খলার মুখে পড়েন। এক ব্যক্তি লেখেন,
“টার্মিনাল ৩-এ চরম বিশৃঙ্খলা। বোর্ডে কিছুই আপডেট হচ্ছে না, কেউ সাহায্য করার নেই। @DelhiAirport @airindia দয়া করে ব্যবস্থা নিন।”
আরেকজন লেখেন,
“দিল্লি বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খলা: এয়ার ইন্ডিয়ার প্রায় সব ফ্লাইট বিলম্বিত। কোনও কর্মী নেই, আপডেট নেই। এই অব্যবস্থার জন্য দায়ী কে?”
এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিমান চলাচলে ব্যাঘাত অস্বাভাবিক নয়, তবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির দায়িত্ব হল দ্রুত তথ্য জানানো এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এই ঘটনায় যে অভাব স্পষ্টভাবে সামনে এসেছে তা হল সমন্বয়, স্বচ্ছতা ও যাত্রীসেবার ঘাটতি। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির উচিত আগামী দিনে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও দক্ষ ও মানবিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।