কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব প্রতিবেদন:
চাকরি না পাওয়া ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) পরীক্ষার্থীরা অবশেষে চারদিন ধরে চলা অনশন তুলে নিলেও জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ হচ্ছে না। রবিবার সকালের দিকে শারীরিক অসুস্থতা ও সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলার জেরে অনশন প্রত্যাহার করা হয়। তবে সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা আদায়ের লড়াই যে অব্যাহত থাকবে, সে কথা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
গত বুধবার রাত থেকে সল্টলেকের SSC অফিসের সামনে অনশন শুরু করেন বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি ছিল, অবিলম্বে প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর ওএমআর (OMR) শিটের ‘মিরর ইমেজ’ দিতে হবে। প্রথমে শান্তিপূর্ণ অবস্থান-বিক্ষোভ দিয়ে আন্দোলন শুরু হলেও, তা ধীরে ধীরে ব্যাপক রূপ নেয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে থাকেন চাকরি না পাওয়া প্রার্থীরা।
অপরদিকে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, “প্রশাসনের তরফে কোনও সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না মেলায় আমাদের ক্ষোভ আরও বেড়েছে।” তবে রবিবার সকালে যাঁরা অনশনে ছিলেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় অনশন তুলে নিতে হয়। শারীরিকভাবে ক্লান্ত সুমন বিশ্বাস, পঙ্কজ রায় ও প্রতাপ রানা—এই তিন আন্দোলনকারী জানান, “আমরা আর কথা বলার অবস্থায় নেই।”
শুক্রবার বিকাশ ভবনে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। বৈঠক ‘ইতিবাচক’ হলেও অনেকেই তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। আন্দোলনকারীদের একাংশ বলেন, “শুধু আশ্বাসে বিশ্বাস নেই, কাগজে কলমে নিয়োগের নিশ্চয়তা না এলে আমরা সরবো না।” সেই কারণে অনেকেই বিক্ষোভ স্থল ছাড়তে রাজি হননি।
শনিবার সকালে বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন স্থান স্থানান্তর করে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তির পাদদেশে চলে যান। তাঁরা বলেন, “আমরা অহিংস পথে নিজেদের দাবি জানাচ্ছি। মহাত্মা গান্ধীর পথেই আমাদের আন্দোলন চলছে।”
বিক্ষোভকারীরা আরও জানান, অনশন প্রত্যাহার করা হলেও তাঁদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলবে। তারা দাবি করেন, “SSC-র নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অস্বচ্ছ। বহু যোগ্য প্রার্থী এখনো চাকরি থেকে বঞ্চিত। রাজ্য সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ না করে, তাহলে এই আন্দোলন আরও বৃহত্তর রূপ নেবে।”
যদিও এই চারদিনের অনশন আপাতত শেষ হলেও বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের ন্যায়ের লড়াই থামছে না। স্বচ্ছ নিয়োগ, ওএমআর শিটের স্বচ্ছতা, এবং অবিলম্বে নিয়োগ—এই তিন মূল দাবিকে সামনে রেখে আবারও পথে নামতে চলেছেন তাঁরা। এবার অন্য রকম গণতান্ত্রিক কণ্ঠে।