কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব প্রতিবেদন:
পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (PNB)–এর ₹১৩,০০০ কোটির বিশাল প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত পলাতক হীরা ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি বেলজিয়ামে গ্রেফতার হলেন। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই (CBI) ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)-এর তরফে করা প্রত্যর্পণের অনুরোধের ভিত্তিতে বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষ তাঁকে গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে, ১২ এপ্রিল, বেলজিয়ামের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আটক করা হয়।
২০১৮ সাল থেকে পলাতক এই হীরাকারবারি নিজের অসুস্থতার অজুহাতে ইউরোপে চিকিৎসার জন্য ভ্রমণ করছিলেন। সূত্রের খবর, সুইজারল্যান্ডে চিকিৎসার আরও উন্নত সুযোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন তিনি, ঠিক সেই সময়েই গ্রেফতার হন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্ত সংস্থা ইন্টারপোল মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে জারি করা রেড নোটিশ প্রত্যাহার করেছিল। তবু থেমে থাকেনি ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলি। ED ও CBI নতুন করে প্রত্যর্পণের জন্য কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ জোরদার করে। অবশেষে তাদের চেষ্টায় সাড়া দেয় বেলজিয়াম সরকার।
চোকসির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি PNB-র কাছ থেকে ভুয়ো লেটার অফ আন্ডারটেকিং (LOU) ও ফরেন লেটার অফ ক্রেডিট (FLC)-এর মাধ্যমে ₹১৩,০০০ কোটির বেশি টাকা তুলে নিয়েছিলেন। তাঁর সংস্থা ‘গীতাঞ্জলি জেমস’-এর নামও ED ও CBI-র একাধিক চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁর ভাগ্নে নিরব মোদির নামও এই মামলায় জড়িত এবং তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের এক জেলে বন্দি অবস্থায় ভারতের প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন।
চোকসিকে ‘ফিউজিটিভ ইকোনমিক অফেন্ডার’ ঘোষণার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে ED। মুদ্রা পাচার সংক্রান্ত মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা জারি রয়েছে। ভারত সরকার তাঁকে দেশে ফেরানোর জন্য এখন আরও সক্রিয় এবং দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।
তবে আইনি দিক থেকে চোকসির প্রত্যর্পণে সময় লাগতে পারে। বেলজিয়ামে তিনি আইনি লড়াই শুরু করতে পারেন বলে ধারণা। তাঁর আইনজীবী দল ইতিমধ্যেই দাবি করেছে, চোকসি রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত এবং ভ্রমণ অযোগ্য। যদিও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পাল্টা যুক্তি দিয়েছে, “যিনি অ্যান্টিগুয়া থেকে বেলজিয়ামে উড়ে আসতে পারেন, তিনি ভারতেও ফিরতে পারেন।”
যদিও চোকসির গ্রেফতারি ভারতের জন্য এক বড় সাফল্য হলেও, তাঁকে দেশে ফেরানোর পথে এখনো একাধিক আইনি চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। তবে সূত্রের খবর, ভারত সরকার ইতিমধ্যেই বেলজিয়ামের সঙ্গে আলোচনায় রয়েছে এবং যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।