কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব প্রতিবেদন:শিলিগুড়ি:
ফের উত্তপ্ত শিলিগুড়ির ৪ নম্বর ওয়ার্ড। টানা দুইদিন ধরে পরপর দুইবার চরক ভক্তদের উপর হামলার অভিযোগ ঘিরে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায়। রবিবার রাতে ঘটনাস্থলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তুমুল ঝামেলা বেঁধে যায়। ইটবৃষ্টি, হাতাহাতি থেকে শুরু করে পুলিশের উপর হামলা— পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ঘটনার জেরে এলাকায় ছড়ায় আতঙ্ক। মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী, র্যাফ ও লাঠিধারী বাহিনী। পুলিশের বার্তা, গুজবে কান না দিয়ে শান্তি বজায় রাখুন।
শনিবার রাতে শিলিগুড়ির চার নম্বর ওয়ার্ডে চরক উৎসব উপলক্ষে ভক্তরা জমায়েত হলে, সেই সময় একদল দুষ্কৃতী তাদের উপর আচমকা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। আহত হন দু’জন চরক ভক্ত, যাদের শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রবিবার সকালে এলাকাটি পরিদর্শনে যান শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ। শিলিগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করে বিজেপির এক প্রতিনিধিদল।
কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগেই রবিবার রাতে ফের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। অভিযোগ, কয়েকজন মদ্যপ যুবক ফের চরক ভক্তদের উপর চড়াও হয়। এরপরই স্থানীয় দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি ক্রমেই হাতাহাতি এবং ইট ছোড়াছুঁড়ির দিকে গড়ায়। ইটবৃষ্টির জেরে আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী। ভাঙচুর হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি ও বাড়িঘর।
ঘটনার পর রাতেই এলাকায় পৌঁছায় খালপাড়া ফাঁড়ি এবং শিলিগুড়ি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরে সোমবার সকালে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর নিজে এলাকা পরিদর্শন করেন। মোতায়েন করা হয় র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র্যাফ), উইনার্স ফোর্স, লাঠিধারী পুলিশ বাহিনী এবং টিয়ার গ্যাস বাহিনী। এলাকা জুড়ে টহলদারি বাড়ানো হয় এবং নজরদারির জন্য মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত আধিকারিক।
কমিশনার সুধাকর স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে বলেন, “গুজবে কান দেবেন না। যারা গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শান্তি বজায় রাখুন। পুলিশ সর্বদা আপনাদের পাশে রয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে খবর, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। সম্ভাব্য ঝামেলা এড়াতে চলবে কড়া নজরদারি। ইতিমধ্যেই হামলার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
এলাকাবাসীর একাংশের মতে, চরক উপলক্ষে প্রতিবছরই মেলা ও উৎসব হয়। তবে এই ধরনের সহিংসতা আগে দেখা যায়নি। তাই ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।