কলকাতা টাইমস নিউজ :বিশেষ প্রতিনিধি, জম্মু ও কাশ্মীর:
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৯ এপ্রিল জম্মুর কটরা থেকে কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের সূচনা করবেন। এই বহুল প্রতীক্ষিত প্রকল্পটি সময়মতো সম্পন্ন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীর বিজেপির সভাপতি সত শর্মা।
তিনি জানান, “প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বন্দে ভারত ট্রেনের সূচনা কেবলমাত্র বৈষ্ণোদেবী দর্শনে আগত যাত্রীদের যাত্রা সহজ করবে না, বরং কাশ্মীরের মনোরম সৌন্দর্যের অভিজ্ঞতাও আরও সুলভ করে তুলবে। এই ট্রেনের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের উন্নয়নে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।”
এর আগে, কটরা-সংগলদান লিঙ্কে বন্দে ভারত ট্রেনের পরীক্ষামূলক চালনা সফলভাবে সম্পন্ন হয়। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী মোদী উদমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল লিঙ্ক (USBRL) প্রকল্পের চূড়ান্ত অংশের উদ্বোধন করবেন, যার দৈর্ঘ্য ২৭২ কিমি।
এই অংশে রয়েছে ঐতিহাসিক চেনাব রেলওয়ে ব্রিজ — যা বিশ্বের সর্বোচ্চ রেল সেতু হিসেবে স্বীকৃত। এই সেতুর মাধ্যমেই সরাসরি নয়াদিল্লি থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
চেনাব সেতুর পাশ্ববর্তী বক্কাল গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, “এই ব্রিজ আমাদের গ্রামের কাছেই। প্রধানমন্ত্রী মোদী উদ্বোধন করতে আসছেন শুনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এই ব্রিজ তৈরির সময় প্রচুর মানুষ কাজের সুযোগ পেয়েছেন, এবং ভবিষ্যতেও কাজের সম্ভাবনা থাকছে।”
রেল বোর্ডের ইনফরমেশন অ্যান্ড পাবলিসিটি বিভাগের নির্বাহী পরিচালক দিলীপ কুমার জানান, “USBRL প্রকল্পটি কেবল একটি রেলপথ নয়, এটি ধর্মীয়, পর্যটন ও যোগাযোগের দিক থেকে কাশ্মীর উপত্যকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২৭২ কিমি রুটের মধ্যে ১১৯ কিমি জুড়ে রয়েছে সুড়ঙ্গ।”
উদ্বোধনের দিনে দুটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হবে – একটি শ্রীনগর থেকে এবং অন্যটি কটরা থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত চলবে।
গত ২৩ জানুয়ারি শ্রীমাতা বৈষ্ণোদেবী কটরা (SVDK) রেল স্টেশন থেকে শ্রীনগর রেল স্টেশন পর্যন্ত প্রথম বন্দে ভারত ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাত্রা হয়। এই ট্রেনটি অঞ্জি খাদ ব্রিজ (ভারতের প্রথম কেবল-স্টে রেল সেতু) এবং চেনাব ব্রিজ পার হয়ে চলবে।
কাশ্মীর উপত্যকার ঠান্ডা আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে এই ট্রেনটি বিশেষভাবে নকশা করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রেল সংযোগ জম্মু ও কাশ্মীরের আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে আমূল পরিবর্তন করে দেবে। ধর্মীয় তীর্থযাত্রা, পর্যটন, এবং ব্যবসায়িক পরিবহণের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে চলেছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।