কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব প্রতিনিধি:
হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি। ভেন্টিলেটরে অচেতন অবস্থায় ছিলেন, আর সেই সময়ই তাঁর ওপর ঘটে যায় এক নারকীয় ঘটনা। গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৪৬ বছর বয়সি এক এয়ার হোস্টেস অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় এবং ভেন্টিলেটরের সহায়তায় শ্বাস নিচ্ছেন এমন সময় তাঁকে যৌন নিপীড়ন করা হয়েছে হাসপাতালের কিছু কর্মীর দ্বারা।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গুরুগ্রাম পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (Bharatiya Nyaya Sanhita – BNS)-এর অধীনে যৌন নিপীড়ন ও নারীর মর্যাদাহানির উপযুক্ত ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত জোরকদমে চলছে।
সূত্র অনুযায়ী, ৬ এপ্রিল ওই মহিলা গুরুগ্রামের সদরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। জানা গেছে, একটি হোটেলে থাকাকালীন সুইমিং পুলে পড়ে প্রায় ডুবে যাচ্ছিলেন তিনি। এরপর প্রথমে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় সদরের এই বেসরকারি হাসপাতালে।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভেন্টিলেটর সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
১৩ এপ্রিল হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে ওই মহিলা তাঁর স্বামীকে গোটা ঘটনার কথা জানান। তাঁর দাবি, হাসপাতালে ভেন্টিলেটরে থাকা অবস্থায় অচেতন হলেও শরীরের স্পর্শ ও আচরণের ভিত্তিতে তিনি বুঝতে পারেন যে অশালীনভাবে তাঁর দেহে হাত দেওয়া হয়েছে, কিন্তু শরীরিক অবস্থার কারণে তিনি তখন কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেননি।বাড়ি ফিরে ওই এয়ার হোস্টেস ১১২ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সাহায্য চান। পরে স্বামীর সহায়তায় এবং আইনজীবীর পরামর্শে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
গুরুগ্রাম পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা ঘটনাটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। অভিযোগকারীর বিবৃতি রেকর্ড করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
অন্যদিকে ঘটনার পরে এক বিবৃতিতে মেদান্তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “ঘটনার তদন্তে আমরা পুলিশকে সম্পূর্ণ সহায়তা করছি। অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি এখনো, তবে সংশ্লিষ্ট সময়ের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র আমরা তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছি।”
যদিও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এখনো অভিযুক্তদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তদন্তের ফোকাস এখন প্রযুক্তিগত ও পারিপার্শ্বিক প্রমাণ সংগ্রহের দিকে। নির্যাতিতার সাক্ষ্য ও হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতেই এই ঘটনার যথাযথ সত্যতা নির্ধারণ হবে।
গুরুগ্রাম পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে যে, এই মামলাটি সংবেদনশীলতা ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে পরিচালিত হচ্ছে।