কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মঙ্গলবার তীব্র ভাষায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন। মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে ঘিরে চলা সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর ‘নীরবতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “বাংলা জ্বলছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চুপ করে বসে আছেন। যাঁরা দাঙ্গা করছে, তাঁদের তিনি ‘শান্তির দূত’ বলছেন। কিন্তু যারা শক্তির ভাষাই বোঝে, তাদের সঙ্গে নরম সুরে কথা বলে কিছু হবে না।”
মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তিতে তিনজনের মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “গত সপ্তাহ থেকে মুর্শিদাবাদ কার্যত আগুনে পুড়ছে। বাড়ি, দোকান, ব্যবসা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, অথচ প্রশাসন নির্বিকার। এই অরাজকতা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।”
যোগী আদিত্যনাথ অভিযোগ করেন, “ধর্মনিরপেক্ষতার নামে দাঙ্গাকারীদের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। বাংলা সরকার মুসলিম সম্প্রদায়কে তুষ্ট করতে গিয়ে হিন্দুদের উদ্বেগ উপেক্ষা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “বিচারব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানাই যারা কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি পুরো বিষয়টিতে চুপ করে রয়েছে।”
যোগী আদিত্যনাথের দাবি, “দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারগুলি মুর্শিদাবাদ ছেড়ে মালদহে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। অথচ রাজ্য সরকার সংখ্যালঘু appeasement-এর রাজনীতি করছে।”
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “ওয়াকফ আইন কেন্দ্রীয় সরকার প্রণীত। রাজ্যের এর সঙ্গে কোনও যোগ নেই। মানুষের উচিত বিভ্রান্ত না হয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস রাখা।”
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদে দাঙ্গা ঘিরে অন্তত ১৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙ্গরেও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যা কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশেই সম্ভব হয়েছে।
অপরদিকে সয়ংকৃষ্ট মহল মনে করছেন, এই অশান্তি রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়াবে এবং রাজ্য সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে।