spot_img
30 C
Kolkata
Friday, May 9, 2025
spot_img

WBSSC দুর্নীতি: নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত কাজ চালাতে পারবেন নির্ভরযোগ্য শিক্ষকরা !

কলকাতা টাইমস নিউজ  ডেস্ক :নিজস্ব প্রতিবেদন:

 

২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (WBSSC) মাধ্যমে হওয়া শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার এক গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্বর্তী আদেশে জানিয়ে দিল, যাঁদের নিয়োগে কোনও দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি—এমন শিক্ষকরা আপাতত চাকরিতে বহাল থাকতে পারবেন। তবে এই রেহাই মিলছে শুধুমাত্র শিক্ষকদের জন্য, গ্রুপ C ও গ্রুপ D-র অশিক্ষক কর্মীদের জন্য নয়।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এই রায় দেন। আদালত জানায়, “ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্যই এই সীমিত রেহাই দেওয়া হচ্ছে।” আদালত স্পষ্ট করে জানায়, “শিক্ষার্থীরা যেন আদালতের রায়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটাই আমাদের প্রথম বিবেচ্য।”

শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, গ্রুপ C ও D বিভাগে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীর সংখ্যা বেশি’, সেই কারণে তাঁদের জন্য কোনও রেহাই দেওয়া যাবে না। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই দুটি বিভাগেই সুপ্রিম কোর্টের মতে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম ও ভুয়ো নিয়োগের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, WBSSC এবং রাজ্য সরকারকে ৩১ মে-র মধ্যে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের নতুন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এবং সেই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। সেই সঙ্গে, সরকারকে একটি হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে, যাতে বলা থাকবে যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

একইসাথে ৩ এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাই কোর্টের ২২ এপ্রিল ২০২৪-এর রায় বহাল রাখে। সেই রায়ে রাজ্য সরকার পরিচালিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল। আদালতের ভাষায়, নিয়োগ ‘দুর্নীতিপূর্ণ ও বাতিলযোগ্য’ ছিল। সেই সঙ্গে, যাঁদের অবৈধভাবে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের সব বেতন ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।রায়ের পর রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক অসন্তোষ। চাকরি হারানো শিক্ষকরা ১১ এপ্রিল কলকাতায় WBSSC অফিসের সামনে ধর্ণায় বসেন। তাদের অভিযোগ, সরকার তাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করেছে।
ডেমোক্র্যাটিক ইয়ুথ ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (DYFI)-সহ বামপন্থী সংগঠনগুলি এই নিয়ে ব্যাপক প্রতিবাদে শামিল হয়।

অন্যদিকে ৭ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। যতদিন আমি বেঁচে থাকব, কোনও যোগ্য মানুষকে চাকরি হারাতে দেব না।”

যদিও শিক্ষকদের জন্য সাময়িক স্বস্তি এলেও, WBSSC কেলেঙ্কারিকে ঘিরে রাজ্যে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা অব্যাহত। শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর আস্থা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং ভবিষ্যৎ নিয়োগ—সবকিছুই এখন নির্ভর করছে সুপ্রিম কোর্টের আগামী রায় এবং সরকার কতটা দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে, তার উপর।

 

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,300SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks