spot_img
31 C
Kolkata
Saturday, May 10, 2025
spot_img

নতুন অধ্যায়ে দিলীপ ঘোষ: ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে বিয়ে করছেন প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি !

কলকাতা টাইমস নিউজ  ডেস্ক :নিজস্ব প্রতিনিধি :

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবন এবং ‘চিরকুমার’ পরিচয়ের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নতুন জীবনের সূচনা করতে চলেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। ৬০ বছর বয়সী এই প্রাক্তন সাংসদ ও বিধায়ক  শুক্রবার, নিউ টাউনের বাসভবনে একান্ত ঘরোয়া অনুষ্ঠানে রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবেন।

ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, এই সিদ্ধান্ত এসেছে এক আবেগঘন ও আত্মসমালোচনার সময়পর্ব পেরিয়ে। গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর মানসিকভাবে কিছুটা নির্জনতা খুঁজছিলেন দিলীপ ঘোষ। এই সময়েই রিঙ্কু মজুমদার, যিনি একজন বিবাহবিচ্ছিন্না ও সেক্টর ফাইভে কর্মরত এক আইটি পেশাজীবীর মা, তাঁর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেন ও একসঙ্গে জীবন শুরু করার ইচ্ছা জানান।

প্রথমদিকে কিছুটা দ্বিধায় থাকলেও, মা ও ঘনিষ্ঠদের পরামর্শে এই বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেন দিলীপ। তাঁর মা দীর্ঘদিন ধরেই ছেলেকে সংসারী দেখতে চেয়েছিলেন। পরিবারও মনে করেছিল, রাজনীতির ব্যস্ত সময়সূচিতে একজন সঙ্গীর প্রয়োজন, যিনি মানসিকভাবে পাশে থাকবেন এবং পরিবারের দায়িত্ব ভাগ করে নেবেন।

এই নতুন সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ মোড় এসেছিল গত ৩ এপ্রিল, ইডেন গার্ডেন্সে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম সানরাইজার্স হায়দরাবাদ-এর আইপিএল ম্যাচ চলাকালীন। ক্লাব হাউজের ১১ নম্বর বক্সে দিলীপ ঘোষ রিঙ্কু, তাঁর পরিবার ও ছেলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। সেই সন্ধ্যা তাঁদের সম্পর্কে নতুন গতি আনে।

বৃহস্পতিবার এই খবরে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হলে সাংবাদিকরা দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি রসিকতা করে বলেন, “বিয়ে করতে পারি না? বিয়ে কি অপরাধ?” যদিও তিনি স্পষ্টভাবে কিছু জানাননি, তবে ঘনিষ্ঠরা বিবাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজেপির একাংশ সূত্রে জানা গেছে, সংঘ পরিবার থেকে দুজন প্রবীণ সদস্য তাঁকে এই সিদ্ধান্ত থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছিলেন। তবে দিলীপ ঘোষ নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন। দলের অন্দরমহলে জানা গেছে, বিজেপির দুই কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বানসাল ও সতীশ ধান্ডা তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে আসছেন।

এই বিয়ে হবে একেবারে সরল, আনুষ্ঠানিকতাবিহীন একান্ত পারিবারিক অনুষ্ঠান। শুধু পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই উপস্থিত থাকবেন। দিলীপ ঘোষ সবসময়ই সাধারণ জীবনযাপন পছন্দ করেন, সেই ধারা বজায় থাকবে এই বিয়েতেও।

তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, দিলীপ ঘোষের মা দীর্ঘদিন ধরে চাইছিলেন যে ছেলে সংসার জীবন শুরু করুক। বাড়ির পোষা কুকুর ‘নাডু’-এর দেখভালের দায়িত্ব নিয়েও চিন্তা ছিল পরিবারের। রাজনৈতিক সফরের কারণে দিলীপবাবুর অনুপস্থিতিতে সঙ্গীর প্রয়োজন অনুভব করছিলেন মা।

প্রথমদিকে দিলীপ ঘোষ আবারও রাজ্য বিজেপি সভাপতির পদে প্রত্যাবর্তনের আশায় বিয়ের ভাবনা এড়িয়ে চলছিলেন। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত বড় রদবদলের সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়ে দেওয়ায়, তিনি ব্যক্তিগত জীবনের দিকে মনোনিবেশ করার সিদ্ধান্ত নেন।

এই বিয়ের মাধ্যমে ‘চিরকুমার’ দিলীপ ঘোষ এক নতুন পরিচয়ে আবির্ভূত হতে চলেছেন—একজন সংসারী মানুষ হিসেবে। আপাতত বৃহৎ কোনো সংবর্ধনার পরিকল্পনা নেই, তবে ঘরোয়া এই মুহূর্তটি তাঁর জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হয়ে থাকছে।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,300SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks