কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব সংবাদদাতা :নয়াদিল্লি
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স আজ চারদিনের ভারত সফরে নয়াদিল্লিতে পৌঁছাচ্ছেন। এই সফরের মূল লক্ষ্য ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অর্থনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করা। সফরে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী ঊষা ভ্যান্স, তাঁদের সন্তানরা এবং মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা।
এই উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ভারত ও আমেরিকা বৈশ্বিক শুল্ক ও সরবরাহ শৃঙ্খল নিয়ে উদ্ভূত সংকটের মধ্য দিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত অনুসন্ধান করছে।
সফরের প্রথম দিনেই জেডি ভ্যান্স প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হবেন। সূত্র জানায়, দুই নেতার এই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি, আঞ্চলিক ভূরাজনীতি, এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভবিষ্যৎ পথ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে,“এই সফর ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি মূল্যায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। বিশেষ করে, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ঘোষিত যৌথ বিবৃতির বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে।”
সরকারি বৈঠক ছাড়াও জেডি ভ্যান্স ও তাঁর পরিবার আগ্রা ও জয়পুর সফর করবেন। সেখানে তাঁরা তাজমহল, আম্বার ফোর্ট-সহ ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলি পরিদর্শন করবেন এবং ভারতীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
এই সফরকে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে চীনকে মোকাবিলায় কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ার একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছর ট্রাম্প সরকার ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছিল, যা পরবর্তীতে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। এতে ভারতের রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছিল।
প্রতিবাদ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মোদি কিছু মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক হ্রাসের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এবং একটি সম্পূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগের মার্কিন সফরে তিনি অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে সহমত প্রকাশ করেন এবং মার্কিন সামরিক প্রযুক্তি ও অস্ত্র আমদানিতে আগ্রহ দেখান। সেই ধারাবাহিকতায় ভ্যান্সের সফরেও এই বিষয়গুলি আলোচনায় আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থায় অস্থিরতা ও বাণিজ্য কাঠামোর চাপে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীল ও নিয়মভিত্তিক অর্থনৈতিক নকশা গড়ে তুলতে। এই সফর সেই লক্ষ্যপূরণের পথ প্রশস্ত করতে পারে।
এই সফরকে ঘিরে আসন্ন নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য বাণিজ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন-এর প্রস্তুতিরও অংশ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। দুই দেশের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও কৌশলগত বন্ধুত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে এই সফরের মাধ্যমে।