spot_img
35 C
Kolkata
Friday, May 9, 2025
spot_img

আবার আদালতের দরজায় ৩২ হাজার প্রাথমিক নিয়োগ! ২৮ এপ্রিল থেকে শুনানি শুরু ডিভিশন বেঞ্চে !

কলকাতা টাইমস নিউজ  :নিজস্ব প্রতিনিধি:

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বহু আলোচিত মামলার শুনানি আবার শুরু হতে চলেছে। আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে ফের কার্যক্রম শুরু করবে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের প্রায় ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের ভবিষ্যৎ এখন কার্যত এই শুনানির উপর নির্ভর করছে।

সোমবার মামলাকারীদের তরফে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত মিত্রর ডিভিশন বেঞ্চে বিষয়টি উত্থাপন করা হলে, বেঞ্চ জানিয়ে দেয়—এই মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানি শুরু হবে আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, মামলার সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি পক্ষকে নোটিস পাঠাতে হবে এবং পরবর্তী শুনানিতে তাদের সরাসরি হাজির থাকতে হবে।

প্রসঙ্গত, এই নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাটি প্রথম সামনে আসে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চে। তিনি ২০২৩ সালের মে মাসে স্পষ্টভাবে জানান, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে ২০১৬ সালে যে ৩২ হাজারেরও বেশি প্রার্থীকে প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তা আইনবিরুদ্ধ। সেই নির্দেশের বিরোধিতা করে রাজ্য সরকার ও একাধিক নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থী হাইকোর্টে আপিল করেন।

এরপর বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ ওই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেন। কিন্তু সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে বিচারপতি সৌমেন সেনের বেঞ্চ তা বাড়িয়ে দেয়। পরে ব্যক্তিগত কারণে বিচারপতি সেন নিজেকে এই মামলা থেকে সরিয়ে নেন, এবং মামলাটি হস্তান্তরিত হয় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে।

২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে রাজ্য সরকার ২০১৬ সালে বিপুল সংখ্যক প্রার্থীকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়। কিন্তু পরে অভিযোগ ওঠে, পরীক্ষার নম্বরপত্র থেকে শুরু করে মেধাতালিকায় ব্যাপক দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ হয়েছে। নিয়োগ তালিকায় নাম উঠেছে অনেক অনভিজ্ঞ বা নম্বর কম পাওয়া প্রার্থীর। এসব নিয়েই মামলা গড়ায় হাইকোর্টে।

এই মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ রায় দেয় যে, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া ‘তথ্য গোপন ও অনিয়মের ভিত্তিতে গঠিত’। ফলে নিয়োগপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। যদিও পরে আপিল ও স্থগিতাদেশের জেরে এখন পর্যন্ত নিয়োগপ্রাপ্তরা চাকরি হারাননি, তবে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

অন্যদিকে শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, এই মামলার রায় শুধু ৩২ হাজার শিক্ষক নয়, বরং ভবিষ্যতের নিয়োগ প্রক্রিয়ার দিশাও নির্ধারণ করবে। নিয়োগপ্রাপ্তরাও আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন—আদালত যেন তাদের চাকরি রক্ষা করে। অন্যদিকে, মামলাকারীরা চাইছেন, অনিয়মিতভাবে যাদের নিয়োগ হয়েছে, তাদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছ ভিত্তিতে নতুন করে নিয়োগ হোক।

একাধিক শিক্ষক সংগঠন, টেট উত্তীর্ণ বঞ্চিত প্রার্থী ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞ—সবাই এই মামলার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। ২৮ এপ্রিলের শুনানির মধ্য দিয়ে কি এবার একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পথে এগোবে আদালত? আপাতত তারই অপেক্ষায় গোটা শিক্ষা মহল।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,300SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks