কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব সংবাদদাতা :শ্রীনগর:
টানা বৃষ্টিপাত এবং মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে উপত্যকার বিস্তীর্ণ অংশে বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কায় সোমবার (২১ এপ্রিল) কাশ্মীর উপত্যকার সমস্ত স্কুলে ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বিশেষ করে জম্মুর রামবান জেলায় মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে তিনজনের মৃত্যু ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী সাকিনা ইতো এক বিবৃতিতে জানান,“আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ও চলমান প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উপত্যকার সমস্ত স্কুলে আগামীকাল (সোমবার) শ্রেণি পাঠ বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
রামবান জেলায় মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে হঠাৎ প্রবল বন্যা দেখা দেয়। জলস্রোতের তোড়ে বহু ঘরবাড়ি ও যানবাহন ভেসে যায়। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০টিরও বেশি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়কের একটি বড় অংশ ধসে পড়েছে। এর ফলে কাশ্মীর উপত্যকার সঙ্গে জম্মুর সংযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এই দুর্যোগে উদ্ধার ও ত্রাণকাজে নামানো হয়েছে স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (SDRF), জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের। রামবান জেলার প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হয়েছে রামবানের গভর্নমেন্ট মিডল স্কুলে, যেখানে তাদের খাবার, পানীয় জল ও প্রাথমিক চিকিৎসা সরবরাহ করা হচ্ছে।
এক স্থানীয় বাসিন্দা যুগল কিশোর চিব বলেন,“এই দুর্যোগে রামবান কার্যত ধ্বংসপ্রাপ্ত। আমরা বহু বছর পর এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হলাম। তবে আমাদের একতা ও সাহসের ওপর ভরসা রেখেই আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
অন্যদিকে জেলা শাসক বশির-উল-হক চৌধুরী জানান,“এই দুর্যোগে প্রাণহানি ও সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল। প্রশাসন তৎপরভাবে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। পাশাপাশি আমরা জনগণকে অনুরোধ করছি, যেন কেউই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা যেমন নালা ও ভূমিধসপ্রবণ অঞ্চলে না যান।”
ভারতীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামীকাল (সোমবার) থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে। তবে উপত্যকার উঁচু এলাকায় হালকা তুষারপাত অব্যাহত থাকবে বলে সতর্কতা জারি রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে উপত্যকা জুড়ে ২১ এপ্রিল, সোমবার, সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে।