কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব সংবাদদাতা:পুরুলিয়া :
ভোরের আলো ফুটতেই ছন্দপতন।ঘুমভাঙা পুঞ্চার মানুষ তখনও চায়ের কাপে চুমুক দিতে শুরু করেননি। ঠিক সেই সময় এক দাঁতাল হাতির আগমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল গোটা অঞ্চলে।
রবিবার সকালে পুরুলিয়ার পুঞ্চা ব্লকের লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বিশালাকৃতি একটি বুনো হাতি। হুড়মুড়িয়ে মাঠ পেরিয়ে, ঘরবাড়ির পাশ ঘেঁষে দৌড়তে শুরু করে সে। কেউ জানলায় মুখ রেখে তাকিয়ে ছিলেন, কেউবা উঠোনে ঝাঁটা হাতে। মুহূর্তে পালানোর হুড়োহুড়ি!
পঞ্চা থানার ব্লক মাঠের কাছেই তখন হাঁটছিলেন বাহাদুর মাহাতো (৭৫)।
হঠাৎই দাঁতাল তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় বাহাদুরবাবুকে প্রথমে পুঞ্চা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল হলেও বয়সজনিত কারণে ঝুঁকি রয়ে গিয়েছে।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দাঁতালটি বাঁকুড়ার ঝাটিপাহাড়ি অঞ্চল থেকে যাত্রা শুরু করে। সেখান থেকে হুড়া ব্লক হয়ে পুঞ্চা, এবং বর্তমানে কাঁসাই নদীর দোলাহা ঘাট পেরিয়ে পৌঁছে গিয়েছে মানবাজার ১ নম্বর ব্লকের জিতুজুড়ি অঞ্চলে।এলাকায় আতঙ্কের মেঘ। চাষিরা সকাল সকাল মাঠে যেতে ভয় পাচ্ছেন। ছোট শিশুদের কেউ একা ছাড়ছেন না বাড়ির বাইরে।
বনদপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “দাঁতালটি এখন জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। চেষ্টা চলছে তাকে গভীর জঙ্গলের দিকে ফিরিয়ে দেওয়ার।”
তবে রাত বাড়লে হাতি লোকালয়ের দিকে চলে এলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকছে বলেই জানাচ্ছেন বনকর্মীরা।
যদিও পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় হাতি হানা নতুন নয়, কিন্তু লোকালয়ে দিনের আলোয় দাঁতালের এমন দাপট সচরাচর দেখা যায় না।
মানবাজারে রাত পোহালেই যদি ফের হাজির হয় দাঁতাল? সে আশঙ্কাতেই আজ ঘুম নেই গ্রামবাসীদের চোখে।