কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব প্রতিনিধি:
দীঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর রাজ্য রাজনীতিতে জোর বিতর্কের ঝড় উঠেছে। একদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘জগন্নাথধাম’ সম্বোধনকে ঘিরে ধর্মীয় আবেগে আঘাতের অভিযোগ, অন্যদিকে, মন্দির নির্মাণে ব্যবহৃত নিম কাঠের উৎস ঘিরে উড়িষ্যা ও বাংলার মধ্যে অদৃশ্য দ্বন্দ্ব।
প্রসঙ্গত, দীঘার জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তিগুলিতে ব্যবহৃত কাঠের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে একাংশ বিদ্বজন। তাঁদের দাবি, পুরীর জগন্নাথধামের নিজস্ব আচার ও মাহাত্ম্য রয়েছে। সেখানে মূর্তি গড়ার জন্য ব্যবহৃত নিম কাঠের উৎস অত্যন্ত পবিত্র ও নিয়মবদ্ধ। সেই কাঠ দীঘায় কীভাবে এলো—তা নিয়ে জবাব চাইছে উড়িষ্যার একাংশ হিন্দু সংগঠনও।
এই বিতর্কের মাঝে রবিবার মুর্শিদাবাদ সফরে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। নাম না করে বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, “দীঘাতে জগন্নাথধাম করেছি বলেই ওদের গায়ে এত জ্বালা!”
তিনি আরও বলেন, “বলা হচ্ছে আমি নাকি নিম কাঠ চুরি করেছি! আরে আমার বাড়িতেই তো চারটে নিমগাছ আছে—দরকার হলে জানাও, ক’টা দিই? আমাদের চুরি করতে হয় না।”
জগন্নাথ মূর্তি সংক্রান্ত বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি ব্যাখ্যা দেন, “আমাদের মূর্তি মার্বেলের ছিল। জগন্নাথের মূর্তি কিনতেও পাওয়া যায়, বহু মানুষের বাড়িতেই থাকে। আমার বাড়িতেও আছে” । তিনি দাবি করেন, “যিনি কাঠ এনেছিলেন, তিনি দ্বৈতপতি। তবে যেখান থেকে কাঠ এসেছে বলে বলা হচ্ছে, সেখান থেকে নয়। তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, তিনি কোনো বেআইনি কাজ করেননি।”
পুজোর সময় সেবায়েতের উপস্থিতি নিয়েও রাজ্য বনাম উড়িষ্যা প্রশাসনের মধ্যে প্রশ্নোত্তরের পর্ব চলছে। মমতা বলেন, “নোটিফিকেশন দিয়ে বলা হচ্ছে, কেউ যেন জগন্নাথধামে না যায়! কেন? আমরা তো সবাই পুরীতে যাই, হিংসা কেন?”
এরপর মুখ্যমন্ত্রী আরও একটি বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন—“উড়িষ্যায় বাংলায় কথা বললেই মানুষকে মারধর করা হচ্ছে। এ কেমন ব্যবহার?”
তিনি আরও বলেন, “উড়িষ্যা বিপদে পড়লে তো আমরা পাশে দাঁড়াই। আলুর টান পড়লে আমরা দিই, সাইক্লোনে বিদ্যুৎ না থাকলে আমাদের ইঞ্জিনিয়ার যায়। সবথেকে বেশি পর্যটক পুরীতেই তো বাংলা থেকে যায়।”
সূত্রের খবর, দীঘার মন্দির নির্মাণে ব্যবহৃত কাঠের উৎস ও সেবায়েতদের উপস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উড়িষ্যা সরকার। তবে বাংলার সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে, সবকিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে।