কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব সংবাদদাতা:
নয়াদিল্লি | বুধবার
বোমা পড়েছে সীমান্তের ওপারে। ঠিক তার পরের মুহূর্তেই দিল্লি থেকে ফোন গেছে ওয়াশিংটন, লন্ডন, রিয়াধ, মস্কো, আবু ধাবি— বিশ্বের কূটনৈতিক শক্তিগুলির প্রধান সদর দপ্তরে।
সেনা-পদক্ষেপের পর এখন আন্তর্জাতিক ব্যাখ্যার পালা—এ যেন সামরিক কৌশলের পর কূটনৈতিক দাবার দ্বিতীয় চাল।পাহেলগামের নারকীয় হামলায় যখন ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন, তখন ভারত শুধু সীমান্তের ভিতর প্রতিক্রিয়ায় থেমে থাকেনি। সূত্রের দাবি, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান ও পিওকে-র মোট ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নিশানা করে আঘাত হানার পরই বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকরা রাতেই একাধিক দেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন।
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, “আমেরিকা, ব্রিটেন, সৌদি আরব, রাশিয়া ও ইউএই–র সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক স্তরের উচ্চপদস্থদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয়েছে।”তাঁদের জানানো হয়েছে, “এটি প্রতিরোধ বা প্রতিশোধ নয়, বরং আত্মরক্ষার ন্যায্য অধিকার প্রয়োগ।”
যদিও এই মুহূর্তে বিদেশি শক্তিগুলোর পক্ষ থেকে প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে এক ধরনের ‘বুঝে নেওয়া’র বার্তা পৌঁছেছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
বিশেষ করে মার্কিন প্রশাসন বরাবরই পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি নিয়ে উদ্বিগ্ন। ফলে ভারতীয় ব্যাখ্যা তাদের কানে একেবারে অচেনা নয়।
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে —
“পাহেলগামের বর্বরোচিত হামলায় ২৫ জন ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিক খুন হয়েছেন। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, এই হামলার দায়ীরা ছাড় পাবে না। আজকের পদক্ষেপ সেই প্রতিশ্রুতির রূপায়ণ।”
এটা শুধুই সামরিক কৌশল নয়—এ এক কূটনৈতিক বার্তাও। ভারত দেখাতে চায়, সীমান্তে আঘাত করার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বমঞ্চেও তার বক্তব্য স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে জানে। একতরফা নয়, বরং যুক্তির পাটাতনে দাঁড়িয়ে ‘অ্যাক্ট অফ সেল্ফ ডিফেন্স’—এই ব্যাখ্যার সঙ্গে দুনিয়াকে পাশে আনার কৌশল বলেই দেখছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকেরা।
সীমান্তে আঘাতের প্রতিধ্বনি এখন গর্জে উঠছে রাষ্ট্রপুঞ্জের করিডরেও। ভারত চায় না, এই অভিযানকে ‘যুদ্ধপ্ররোচনা’ হিসেবে দেখা হোক—তাই দ্রুত কূটনৈতিক ব্যাখ্যা। তবে প্রশ্ন একটাই—পাকিস্তান এবার কী পথে হাঁটবে? এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চ কতটা বিশ্বাস করবে ভারতের কথায়?