কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : নিজস্ব প্রতিবেদন :
পহেলগামের নৃশংস হামলার ঠিক ১৫ দিনের মাথায় বুধবার সকালেই পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি স্থানে লক্ষ্যভেদী হামলা চালাল ভারত। বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে ও শিয়ালকোট— পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে তিনটি এবং পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে পাঁচটি জায়গা। একযোগে অপারেশন চালায় ভারতীয় সেনা, নৌ ও বায়ু বাহিনী।
এই ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মূল লক্ষ্য ছিল— সন্ত্রাসের পরিকাঠামো ধ্বংস করা, সাধারণ নাগরিক বা পাক সেনা নয়। সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই জানালেন বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রী, যাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কম্যান্ডার ব্যোমিকা সিংহ।
বিদেশসচিব জানান, “এই হামলা ছিল সুপরিকল্পিত, সংযত ও প্রতিরোধমূলক। ভারতীয় গোয়েন্দারা স্পষ্টতই আভাস পেয়েছিল, দেশের ভিতর আরও হামলার ছক রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করেছে ভারত।”
মিশ্রীর মতে, পহেলগামের হামলা ছিল পরিকল্পিত, নিষ্ঠুর এবং মনস্তাত্ত্বিক সন্ত্রাসের চূড়ান্ত উদাহরণ। “পরিবারের সামনেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে ২৬ জন নিরীহ মানুষকে। এর উদ্দেশ্য ছিল কাশ্মীরে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াকে ধাক্কা দেওয়া।”
ভারতীয় বাহিনীর লক্ষ্য ছিল জইশ-ই-মহম্মদ (JeM) ও লস্কর-ই-তইবা (LeT)-র সেই ঘাঁটিগুলি, যেখান থেকে জঙ্গিদের ট্রেনিং দিয়ে ভারতে পাঠানো হতো। বাহাওয়ালপুরে JeM-এর প্রধান প্রশিক্ষণ শিবির, মুরিদকে ও শিয়ালকোটে রয়েছে লস্করের কার্যকলাপের কেন্দ্র।
বিদেশসচিবের অভিযোগ, হামলার পর দুই সপ্তাহ কেটে গেলেও পাকিস্তান কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে। “এই পরিস্থিতিতে অপরাধীদের বিচার চেয়ে বসে থাকা যায় না। তাই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে পদক্ষেপ করেছে ভারত।”
রক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সব কটি লক্ষ্যভেদ সফল হয়েছে। কোনও সাধারণ নাগরিক বা অবৈধ সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। শুধুমাত্র জঙ্গি পরিকাঠামোর উপরই আঘাত হানা হয়েছে।
এই অপারেশন ছিল একেবারেই প্রতিক্রিয়াশীল, উত্তেজনা না বাড়িয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ।
ভারতের এই পদক্ষেপ কূটনৈতিক পরিসরে একটি কড়া বার্তা— সন্ত্রাসকে আর সহ্য করা হবে না। যুদ্ধ নয়, প্রতিরোধই এ বার ভারতের নীতির কেন্দ্রে।