কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব সংবাদদাতা:
নয়াদিল্লি | বুধবার
রাত পোহায়নি। ঘড়ির কাঁটা তখন মাঝরাত পার করছে। দিল্লির সাউথ ব্লকের এক নির্জন ঘরে জ্বলছে আলো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চোখ রাখছেন একের পর এক লাইভ ফিডে—জম্মু-কাশ্মীর থেকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর পর্যন্ত চালানো হচ্ছে এক নিখুঁত সামরিক অভিযান: কোডনেম—অপারেশন সিঁদুর।
পাহেলগামে বর্বর জঙ্গি হামলার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় ভারত প্রতিশোধ নেয়, তবে সেটি কোনও বেপরোয়া যুদ্ধঘোষণা নয়—বরং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে নির্ধারিত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিকে নিশানা করে এই অভিযান।
সূত্র জানাচ্ছে, মূল লক্ষ্য ছিল জইশ-ই-মহম্মদ ও লস্কর-ই-তইবা—দুই আন্তর্জাতিকভাবে চিহ্নিত পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব ও পরিকল্পনাকেন্দ্র।
রাত পেরিয়ে সকাল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি আসে—
“এই অভিযান ছিল নিয়ন্ত্রিত, সুনির্দিষ্ট এবং সম্পূর্ণরূপে পাকিস্তানি সেনা কাঠামোর বাইরে পরিচালিত। আমরা কোনও সামরিক স্থাপনায় আঘাত করিনি। এটি আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ, যুদ্ধ প্ররোচনার উদ্দেশ্যে নয়।”
সূত্র জানাচ্ছে, অপারেশনে আধুনিক লোটারিং মিউনিশন থেকে শুরু করে হাই-প্রিসিশন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। সেনা, নৌ ও বায়ুসেনা—তিন বাহিনীই যুক্ত ছিল এই অভিযানে। আক্রমণ চালানো হয়েছে সম্পূর্ণ ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে। লক্ষ্যবস্তু ঠিক করতে সহায়তা করেছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা।
২২ এপ্রিলের পাহেলগাম হামলায় ২৫ জন ভারতীয় ও ১ জন নেপালি নাগরিক নিহত হন। তাদের হত্যার দায় যাদের কাঁধে, তাদেরই ঘাঁটি ছিল এই অপারেশনের নিশানা। প্রধানমন্ত্রী আগেই বলেছিলেন,
“জবাব দেওয়া হবে। এবং তার দায়দায়িত্ব আমরা নেব।”
মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত সেই প্রতিশ্রুতিই কার্যকর হল।
অভিযানের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গোলাবর্ষণ করে জম্মু-কাশ্মীরের ভিম্বার গলি অঞ্চলে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীও পালটা প্রতিক্রিয়া জানায় ‘ক্যালিব্রেটেড কাউন্টার-অ্যাকশন’-এর মাধ্যমে। ADGPI এক বিবৃতিতে জানায়—
“পাকিস্তান ফের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। ভারতীয় সেনা উপযুক্ত ও নিয়ন্ত্রিতভাবে তার জবাব দিচ্ছে।”
এটি শুধু একটি সামরিক অভিযানের নাম নয়—এ এক কূটনৈতিক বার্তা, রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রতিফলন এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের অনমনীয় অবস্থানের প্রতীক।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে, সেনার দক্ষতায়, গোয়েন্দা তথ্যের নিখুঁত ব্যবহারে এবং আন্তর্জাতিক মহলে সচেতন বার্তায়—“অপারেশন সিঁদুর” হয়ে উঠল ভারতের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।