কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : নিজস্ব সংবাদদাতা :
পঞ্চাশ না ছেষট্টি? পুরভোট নিয়ে সংশয়েই দিন গুনছেন হাওড়াবাসী
ওয়ার্ড বেড়েছে, নাগরিক আশা বাড়েনি। দীর্ঘ ছ’বছর ধরে নির্বাচনের মুখ দেখতে না পাওয়া হাওড়া পুর এলাকার মানুষ এখন একটাই প্রশ্নে দাঁড়িয়ে—ভোট হবে তো? আর হলে, কোথায় হবে—পুরনো ৫০টি ওয়ার্ডে, না কি নবগঠিত ৬৬টিতে?
হাওড়া পুরনিগমের ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস নিয়ে সরকারের নীরবতা আর রাজ্যপালের বিল নিয়ে সৃষ্ট দ্ব্যর্থতা মিলে যেন অন্ধকারে রেখে দেওয়া হচ্ছে নাগরিকদের। এক দিকে রাজ্য সরকার বলছে, ডিলিমিটেশনের খসড়া তৈরি হয়ে গেছে। অন্য দিকে, সেই খসড়া এখনো জনসমক্ষে প্রকাশ পায়নি। তাতেই নাগরিকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
পুনর্বিন্যাস আছে, পরিষেবা নেই
২০১৫ সালে বালি পুরসভা যুক্ত হয়েছিল হাওড়ার সঙ্গে। ২০১৮ সালে শেষ হয় নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ। তার পর থেকে চলছে প্রশাসকের শাসন। যাঁরা একদিন কাউন্সিলারের মাধ্যমে নিজেদের পানীয় জল, ড্রেনেজ, সার্টিফিকেটের সমস্যার সমাধান করতেন, আজ তাঁদের দ্বারস্থ হতে হয় বিধায়ক বা সাংসদের।
ভোটের প্রশ্নে রাজনৈতিক দ্বিধা
রাজ্যপাল বিলের উপর সই করলেও ভোটের কাঠামো নিয়ে স্পষ্ট করেননি কেউই। হাওড়া পুরসভা নিয়ে রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী অরূপ রায়ের বক্তব্য, ‘‘এক জনের চোখ দিয়ে এত বড় পুরসভা চালানো সম্ভব নয়। ভোট জরুরি। তবে ৫০ না ৬৬—সে সিদ্ধান্ত বিশেষজ্ঞরা নেবেন।’’
বিজেপি নেতা উমেশ রায়ের অভিযোগ, ‘‘ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়াটি দুর্বোধ্য, স্বচ্ছ নয়। সাধারণ মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন না। এই বিভ্রান্তি কেবলমাত্র শাসকদলের রাজনৈতিক ফায়দা তোলার কৌশল।’’
ওয়ার্ডের অঙ্ক, নাগরিক জীবনের ব্যথা
এক দিকে ওয়ার্ড বাড়ছে—হাওড়া পুরনিগমে ৫০ থেকে ৬৬, বালিতে ১৬ থেকে ৩৬। অথচ বর্ধিত এলাকা মানেই উন্নত পরিষেবা—এই সরল সমীকরণ হাওড়াবাসীর জীবনে খাটে না। শহরের ড্রেন ভর্তি, রাস্তা ভাঙা, ভ্যাট উপচে পড়ছে, জল জমছে বৃষ্টিতেই। মানুষের ক্ষোভ—”নির্বাচিত কাউন্সিলার নেই, তাই প্রশাসনের কেউ দায় নিচ্ছেন না।”
এ বছরের মধ্যেই হবে ভোট ?
সরকার বলছে, চেষ্টা চলছে। তৃণমূল নেতাদের আশা, ২০২৫-এর মধ্যেই হবে ভোট। কিন্তু প্রশ্ন একটাই—তালিকা গোপন রেখে, জনমতকে অন্ধকারে রেখে কীভাবে নিরপেক্ষ ভোট সম্ভব?