spot_img
29.3 C
Kolkata
Thursday, May 15, 2025
spot_img

রোহিঙ্গা করিডোর ঘিরে উত্তেজনা, বাংলাদেশের সেনাতেই দ্বিধা: সতর্ক নজরে দিল্লি !

কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : নিজস্ব প্রতিবেদন :

রাখাইনে সহিংসতা বাড়ছে। সেই চাপ সামাল দিতে গিয়ে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য ‘মানবিক করিডোর’ তৈরি ও বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তকে সামরিক অভিযানাঞ্চল (Military Operations Zone) হিসেবে ঘোষণা করার কথা ভাবছে। তবে এই পরিকল্পনা ঘিরেই এবার গভীর মতবিরোধ দেখা দিয়েছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত ও বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে উঠেছে ভারত।

দিল্লির এক উচ্চপদস্থ কূটনৈতিক আধিকারিকের কথায়, “আমরা সরাসরি এই অঞ্চলের নিরাপত্তা কাঠামোর অংশ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সেনা-নীতির দ্বন্দ্বের ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তার প্রভাব পড়তে পারে। সেই আশঙ্কায় পরিস্থিতি আমরা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।”

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর একটি শক্তিশালী অংশ—আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন (AFD) ও ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (DGFI)— সীমান্তে পূর্ণ সামরিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পক্ষে। তাদের দাবি, সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ, মাদক পাচার, ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবাহের মোকাবিলায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী BGB-এর সক্ষমতা ফুরিয়ে এসেছে। তাই সীমান্তে UAV, স্যাটেলাইট নজরদারি, এবং প্রয়োজনে ‘শুট অন সাইট’ নীতিও চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

কিন্তু এই নীতির কড়া বিরোধিতা করেছেন সেনার আর এক অংশ। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ও তাঁর অনুগামী কমান্ডাররা মনে করছেন, এই পরিকল্পনা বিপজ্জনক ও বহিরাগত শক্তির প্ররোচনায় গৃহীত। তাঁদের দাবি, “যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলকে চাপে রাখতেই আরাকান আর্মি ও মায়ানমারের প্রতিরোধ বাহিনীকে গোপনে সমর্থন দিচ্ছে। বাংলাদেশ যেন সেই প্ররোচনায় না পা দেয়।”

ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের আশঙ্কা, সীমান্তে যদি নতুন করে সংঘাত শুরু হয়, তা হলে তা সরাসরি প্রভাব ফেলবে অসম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উপর। “রাখাইনে উত্তেজনা বাড়লে ফের শরণার্থীদের ঢল নামতে পারে, সেইসঙ্গে বেড়ে যেতে পারে অস্ত্র ও মাদকের পাচার, যা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিকে ফের সক্রিয় করে তুলবে,” জানিয়েছেন এক প্রতিরক্ষা সূত্র।

আরও জটিল হয়ে উঠেছে চীনের ভূমিকা। রাখাইন অঞ্চলে চীনা বিনিয়োগ ও পরিকাঠামো প্রকল্প চলায় বেইজিংও চায় না, কোনও পশ্চিমা শক্তি মানবিক করিডোরের নামে সেখানে পা রাখুক। সেক্ষেত্রে ভারত ও চীন একযোগে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করতে পারে।
দিল্লির মতে, “যদি বাংলাদেশ একতরফা সামরিকীকরণের পথে এগোয়, তাহলে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলিতে যেমন BIMSTEC, তেমনই ASEAN-India মঞ্চগুলিতেও আস্থার সংকট তৈরি হতে পারে।”

বাংলাদেশের সামরিক নীতিতে এই বিভাজন এমন সময়ে দেখা দিয়েছে, যখন দেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ বাড়ছে। এই প্রেক্ষিতে ভারতের পক্ষে এখন জরুরি— ঢাকার সঙ্গে কূটনৈতিক বোঝাপড়া আরও জোরদার করা।

“একটি প্রতিবেশী দেশের সেনার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব যদি গোটা উপমহাদেশকে বিদেশি শক্তির প্রভাব বলয়ে ঠেলে দেয়, তাহলে ভারতীয় কূটনীতিরও ভাবনা বদলাতে হবে,” বলছে দক্ষিণ ব্লকের এক আধিকারিক।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,300SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks