কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : নিজস্ব সংবাদদাতা :
৮০০ টাকায় কলকাতা থেকে মুম্বই বা চেন্নাই, রেলের নতুন প্রতিশ্রুতি সাধারণের পাশে দাঁড়ানোর
কল্পনা করুন—আপনি হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে ৮০০ টাকার কম খরচে পৌঁছে যাচ্ছেন মুম্বই কিংবা চেন্নাই। সঙ্গে পেয়ে যাচ্ছেন সংরক্ষিত আসনের সুবিধা, আর ভরসার মতো সময়ানুবর্তিতা। বিলাসিতা নয়, কিন্তু মর্যাদাপূর্ণ স্বস্তি—ঠিক এটাই আনতে চলেছে ভারতীয় রেলের ‘অমৃত ভারত এক্সপ্রেস’।
২০২৫–২৬ অর্থবর্ষের মধ্যেই দেশের রেল মানচিত্রে উঠে আসবে অন্তত ৫০টি অমৃত ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন। লক্ষ্য একটাই—অর্থনৈতিকভাবে স্বস্তিদায়ক, অথচ গতিতে কখনও পিছিয়ে না থাকা এক রেল অভিজ্ঞতা পৌঁছে দেওয়া দেশের সাধারণ যাত্রীদের কাছে।
৮০০ টাকার মধ্যেই মুম্বই বা চেন্নাইয়ের মতো দুরত্ব অতিক্রম—এই ভাড়ার কথা শুনে অনেকেই হয়তো ভ্রু কুঁচকোতে পারেন। কিন্তু রেলের দাবি, এটি এক বাস্তব পরিকল্পনা, যা শুধু স্বপ্ন দেখায় না, বাস্তব রূপ দেয়।
এই নন–এসি ট্রেনগুলিতে থাকছে দু’ধরনের আসন—সংরক্ষিত ও অসংরক্ষিত। অর্থাৎ, দরকারে আপনি পূর্বনির্ধারিত টিকিট নিয়ে নিশ্চিন্ত যাত্রা করতে পারেন, আবার হঠাৎ গন্তব্যে রওনা দেওয়ার প্রয়োজন হলেও উঠতে পারেন ট্রেনে।
রেলের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, এই ট্রেনও বন্দে ভারতের মতো ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। হাওড়া থেকে মুম্বই যেতে সময় লাগবে আনুমানিক ৩০ ঘণ্টা, চেন্নাই যেতে ২৬ ঘণ্টা। অর্থাৎ, ট্রেনের গতি নিয়ে কোনো আপস নয়।
‘মিশন রাফতার’ আর ‘গতিমান ভারত’ প্রকল্পের হাত ধরে গতির যে রেল–বিপ্লব শুরু হয়েছে, ‘অমৃত ভারত এক্সপ্রেস’ সেখানে এক নতুন ছাপ রাখবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বন্দে ভারত, তেজস, বুলেট ট্রেন—সবই ভারতীয় রেলের উচ্চবিত্তমুখী উন্নয়নের মুখ। কিন্তু অমৃত ভারত এক্সপ্রেস তার ঠিক বিপরীত—এটি সাধারণ মানুষের রেল।
কলকাতা আগেই ট্রেনের মাধ্যমে যুক্ত মুম্বই ও চেন্নাইয়ের সঙ্গে। কিন্তু এই দুই শহরের মধ্যে আরও দ্রুত, সস্তা এবং ভরসাযোগ্য যোগাযোগ গড়ে তোলাই ‘অমৃত ভারত’-এর উদ্দেশ্য। দেশের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগ আরও শক্তিশালী করতেও এই উদ্যোগকে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মানছেন রেলনীতি বিশেষজ্ঞরা।
দ্রুতগামী আর দামি নয়, ধীরস্থির অথচ গতিশীল। ‘অমৃত ভারত এক্সপ্রেস’ আসলে এক প্রতিশ্রুতি—সাধারণ মানুষের যাত্রাকে মর্যাদা দেওয়ার। রেল কেবল গতির প্রতীক নয়, তা হোক মানুষের স্পর্শের সেতুও।