কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব প্রতিবেদন:
🔹 মাসুদ আজহারের ভাই সহ ১৫ জইশ নেতার মৃত্যুতে তোলপাড়
🔹 সরকারি নিশ্চয়তা এখনো না এলেও কড়া বার্তা ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার
জইশ-ই-মহম্মদের কুখ্যাত নেতা ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী আব্দুর রউফ আজহার ‘অপারেশন সিনদূর’-এ নিহত হয়েছেন—এমনটাই দাবি করল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। তাঁকে নিয়ে একাধিক চাঞ্চল্যকর সন্ত্রাসী হামলার নেপথ্যে থাকার অভিযোগ ছিল, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১৯৯৯ সালের আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণ।
বৃহস্পতিবার বিজেপি একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানায়, “সবচেয়ে কুখ্যাত ও মোস্ট ওয়ান্টেড জইশ নেতা আব্দুর রউফ আজহার মারা গেছে।” দলীয় সূত্রের দাবি, রউফ-সহ জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারভুক্ত আরও ১৪ জন সন্ত্রাসবাদীও এই অভিযানে নিকেশ হয়েছে।
গত ৭ মে ভারতের তরফে চালানো ‘অপারেশন সিনদূর’ ছিল ২২ এপ্রিলের পাহেলগামের জঙ্গি হামলার প্রত্যুত্তরে বড়সড় সামরিক অভিযানের সূচনা। সেই হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৮ জন নিরীহ নাগরিক। এরপর থেকেই জইশ-সহ পাকিস্তানভিত্তিক একাধিক জঙ্গি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হানা দিতে শুরু করে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার মতে, আব্দুর রউফ আজহার ছিলেন জইশ-এর কার্যকরী প্রধান এবং বহু ভয়ঙ্কর হামলার মূল পরিকল্পক। তার বিরুদ্ধে ওঠা বড় অভিযোগগুলি হল:
-
১৯৯৯: আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণ, যা কান্ধাহারে গিয়ে থামে, এবং ভারত বাধ্য হয় তিনজন জঙ্গিকে মুক্তি দিতে—তাদের একজন ছিলেন ওমর শেখ।
-
২০০১: সংসদে জঙ্গি হামলা, যার পরিকল্পনায় রউফ প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেন।
-
২০১৬: পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলা।
২০১০ সালে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ রউফকে ‘গ্লোবাল টেররিস্ট’ হিসাবে ঘোষণা করে। তিনি জইশের প্রশিক্ষণ শিবির এবং আত্মঘাতী হামলার ছক তৈরির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। পাকিস্তানে থাকা ভারতবিরোধী কার্যকলাপের অন্যতম মাথা ছিলেন তিনি।
রউফ আজহারের মৃত্যুর খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ড্যানিয়েল পার্ল-এর পিতা। মার্কিন সাংবাদিক পার্লের ২০০২ সালে অপহরণ ও খুনের ঘটনায় রউফের পরোক্ষ জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। পার্লের পিতা বলেছেন, “এমন একজন মানুষের মৃত্যু যারা বহু নিরীহ প্রাণের জন্য দায়ী—তা আমার কাছে কিছুটা স্বস্তির।”
যদিও বিজেপি তাদের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে রউফের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে, ভারতের প্রতিরক্ষা দপ্তর বা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি। বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রি বলেন, “আমরাও দেখেছি সোশ্যাল মিডিয়ার খবর। সময় মতো উপযুক্ত তথ্য জানানো হবে।”
অপারেশন সিনদূরের মাধ্যমে ভারত কার্যত স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—সন্ত্রাসের উত্স যেখানে-ই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে জবাব দেওয়ার ক্ষমতা ও সদিচ্ছা ভারত রাখে। এই অভিযানে রউফ আজহারের মৃত্যুর খবর যদি সত্যি হয়, তবে এটি জইশ-সহ সন্ত্রাসের মেরুদণ্ডে বড় আঘাত।