কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব সংবাদদাতা:
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনার মধ্যে দেশজুড়ে গৃহীত হল একাধিক প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ। পাঞ্জাব, রাজস্থান ও জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে মঙ্গলবার রাত থেকে চালু হয়েছে নিয়ন্ত্রিত ‘ব্ল্যাকআউট’ ব্যবস্থা। উদ্দেশ্য—বিমান হামলা বা ড্রোন নজরদারি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও নাগরিকদের রক্ষা করা।
পাঞ্জাবের অমৃতসর, গুরদাসপুর, পাঠানকোট, জলন্ধর, হোশিয়ারপুর, ফারিদকোট, কপুরথলা, ফাগওয়ারা, রুপনগড় এবং নাঙ্গল জেলায় রাতে আলো বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছে প্রশাসন।
বিশেষ করে গুরদাসপুর জেলা প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে—প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলবে ব্ল্যাকআউট।
যদিও হাসপাতাল ও কেন্দ্রীয় জেলগুলোর মতো জরুরি পরিষেবাকে এই নিয়মের বাইরে রাখা হয়েছে, তবুও তাদের জানালাও ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে যাতে ভিতরের আলো বাইরে বের না হয়।
রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলিতেও একই রকম ব্ল্যাকআউট ব্যবস্থা চালু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছে সিভিল ডিফেন্স ও পুলিশ বাহিনী। সীমান্ত এলাকায় উচ্চ সতর্কতা অব্যাহত রয়েছে।
জম্মুর সীমান্তবর্তী গ্রাম ও শহরগুলোতেও জারি হয়েছে একই নির্দেশ। বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে চলছে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়। রাত নামলেই আলো বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে সমস্ত বসতি ও সরকারি ভবনে।
এদিকে চণ্ডীগড় প্রশাসনের তরফে শহর জুড়ে ব্ল্যাকআউট ঘোষণা করা হয়েছে। রাতভর বাজানো হয়েছে এয়ার রেইড সাইরেন। চণ্ডীগড় সংলগ্ন জিরাকপুর, মোহালি ও পঞ্চকুলাতেও বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে।
৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে ভারতের বিশেষ সামরিক অভিযানে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ধ্বংস করা হয় ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি। তারই প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এর আগে ২২ এপ্রিল পহেলগামে লস্কর যোগে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’-এর হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক।
এই ব্ল্যাকআউটের উদ্দেশ্য মূলত রাতের অন্ধকারে শত্রু ড্রোন বা যুদ্ধবিমান যাতে লক্ষ্য ঠিক করতে না পারে, সেই সুরক্ষাবলয় তৈরি করা। পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে গ্রাউন্ড-লেভেল নজরদারি ও প্রস্তুতি।
প্রশাসনের তরফে সাধারণ মানুষকে বলা হয়েছে, ঘরের জানালা, দরজা ঢেকে রাখতে, বাহ্যিক আলো বন্ধ রাখতে এবং প্রশাসনের নির্দেশ কঠোরভাবে মেনে চলতে।
সীমান্ত পরিস্থিতি ঘিরে সার্বিক নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রতিরক্ষা দপ্তর। প্রয়োজনে আরও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গৃহীত হবে বলেও সূত্রের খবর।