কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব প্রতিবেদন:
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনার আগুন জ্বলছে। শুক্রবার সকালে পাঞ্জাবের পাঠানকোট সেক্টরে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে একটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান। সামরিক সূত্রের খবর, বিমানটি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশের চেষ্টাকালে শনাক্ত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গেই লক্ষ্যভ্রষ্ট করে দেওয়া হয়।
সরকারের তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না এলেও প্রতিরক্ষা মহলের একাধিক শীর্ষসূত্র ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। মনে করা হচ্ছে, এই ঘটনা ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তানের পাল্টা প্রতিক্রিয়ারই অংশ।
এদিন ভোরেই জম্মু-কাশ্মীরের নওশেরা সেক্টরে ভারতীয় সেনা দুই পাকিস্তানি ড্রোন গুলি করে নামায়। সীমান্তের ওপার থেকে শুরু হয় গোলাবর্ষণ, যার জবাবে ভারতীয় সেনাও পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়। এর মধ্যেই পাঠানকোটে পাক যুদ্ধবিমানের প্রবেশ এবং ধ্বংস—পুরো পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা সদর দফতরের (HQ IDS) বিবৃতি অনুযায়ী, পাকিস্তান একযোগে একাধিক সেনা স্থাপনাকে নিশানা করেছিল—জম্মু, পাঠানকোট এবং উদমপুর এর মধ্যে ছিল অন্যতম। ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে আক্রমণের চেষ্টা হলেও ভারতীয় বাহিনী তা সাফল্যের সঙ্গে প্রতিহত করে।
“আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিকটে অবস্থিত জম্মু, পাঠানকোট ও উদমপুরের সেনা ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করেছিল পাকিস্তান। কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। SOP অনুসারে কাইনেটিক এবং নন-কাইনেটিক উপায়ে ভারতীয় সেনা হুমকি নিষ্ক্রিয় করে।”
পাকিস্তানের একের পর এক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রেক্ষিতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৃহস্পতিবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। উপস্থিত ছিলেন বিএসএফ, আইটিবিপি, এসএসবি-র মতো সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ আধিকারিকরা।
সুরক্ষা নিয়ে আরও সতর্কতা নেওয়া হয় বিভিন্ন বিমানবন্দরে। সিআইএসএফের ডিজির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এই পুরো ঘটনার মূলে রয়েছে ভারতীয় বাহিনীর ৭ মে’র অভিযান—‘অপারেশন সিঁদুর’। ওই অভিযানে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। পহেলগামের ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলার বদলা হিসেবেই এই অপারেশন বলে জানায় ভারতীয় সেনা।
ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ধ্বংস হওয়া ঘাঁটিগুলি লস্কর-এ-তৈবা ও জইশ-ই-মহম্মদের মতো সংগঠনের মূল অপারেশনাল ঘাঁটি ছিল। হামলার লক্ষ্য ছিল জঙ্গি অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মূল পরিকাঠামো।
ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বর্তমান আবহে এই ঘটনাগুলি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে সেনা, আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। কূটনৈতিক মহলও নজর রাখছে পরিস্থিতির উপর।
ভারতের তরফে এখনও যুদ্ধ নয়, তবে প্রস্তুতি পূর্ণমাত্রায় চলছে। পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে পাকিস্তানের পরবর্তী আচরণ।