spot_img
32 C
Kolkata
Sunday, May 11, 2025
spot_img

 নিশব্দে থেমে গেল গর্জন: ভারত-পাকিস্তানের আকস্মিক যুদ্ধবিরতি—মার্কিন কূটনীতির ছায়া ?

কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : 

বিশেষ প্রতিবেদন  : দেবজিৎ গাঙ্গুলী 

শনিবার বিকেল গড়াতেই যেন এক অপ্রত্যাশিত শান্তি নেমে এল উপমহাদেশে। ঠিক বিকেল ৩:৩৫ মিনিটে পাকিস্তানের ডিজিএমও ফোন করেন ভারতীয় ডিজিএমও-কে। তারপর মাত্র দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে, সন্ধ্যা ৫টা থেকে স্থল, জল ও আকাশপথে সব রকমের গোলাগুলি ও সামরিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঘোষণা আসে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রীর কণ্ঠে—ছোট অথচ তাৎপর্যপূর্ণ এক বিবৃতিতে।

যুদ্ধের উত্তেজনায় জ্বলছিল সীমান্ত—পূর্বে ক্ষেপণাস্ত্র হানা, জবাবে পালটা আক্রমণ। ঠিক তখনই এক ফোন বদলে দিল আবহ। ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে বলে জানান বিদেশ সচিব। ১২ই মে আবার হবে দুই দেশের সেনাপ্রধানদের মধ্যে আলোচনা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, দুই দেশ নিজস্ব উদ্যোগেই সমঝোতায় পৌঁছেছে। তবে রাজনৈতিক মহল বলছে অন্য কথা।

আসলে, ঠিক এর পরপরই আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প Truth Social-এ এক পোস্টে জানান, “ভারত ও পাকিস্তান সম্পূর্ণ ও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, যা হয়েছে মার্কিন মধ্যস্থতায়।”

ট্রাম্পের কথায়, “Common Sense এবং Great Intelligence” দিয়ে শান্তির পথে হাঁটল দুই দেশ। তাঁকে অনুসরণ করে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স একযোগে জানান, গত ৪৮ ঘণ্টায় তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, দুই দেশের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কর্তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক যোগাযোগ রেখেছিলেন।

 রুবিও জানিয়েছেন, ভারত-পাকিস্তান শুধু যুদ্ধবিরতিতেই নয়, আরও বিস্তৃত ইস্যুতে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত সেই নিরপেক্ষ জায়গা বা আলোচনার বিষয়বস্তু খোলসা হয়নি।

ভারতের সরকারি সূত্রে দাবি, পাকিস্তানের তরফ থেকেই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আসে। দুপুরের ফোনালাপেই সিদ্ধান্ত হয়। অর্থাৎ, আমেরিকা যে একে নিজের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরছে, তা একেবারেই অতিরঞ্জিত বলেই মনে করছে দিল্লি।

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার এক্সে লেখেন—“সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে আপস না করে, পাকিস্তান সবসময় শান্তির পক্ষে থেকেছে।”

বারবার সংঘর্ষ, তারপর হঠাৎ যুদ্ধবিরতি—দুই দেশের সম্পর্ক যেন এক ‘স্টার্ট-স্টপ’ নাটক। এবারও কি সেই পুরনো প্যাটার্নেরই পুনরাবৃত্তি? নাকি আন্তর্জাতিক চাপ, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অবস্থান এবং কূটনৈতিক আলোচনার এক নতুন অধ্যায়?

বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, এখনও এ নিয়ে নিশ্চিত কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে আপাতত সীমান্তে কিছুটা নিস্তব্ধতা—এটাই বড় খবর।

পরবর্তী আলোচনা: ১২ মে, দুপুর ১২টা। ততক্ষণ, যুদ্ধবিরতির নামেই হোক—শান্তির পথেই হাঁটুক উপমহাদেশ।

 

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,300SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks