spot_img
32 C
Kolkata
Sunday, May 11, 2025
spot_img

সন্ধ্যাবেলায় ‘শান্তির প্রতিশ্রুতি’, রাত গড়াতেই গর্জন! পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ঘিরে উত্তাল কাশ্মীর ও সীমান্ত এলাকা

কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : 

বিশেষ প্রতিবেদন  : দেবজিৎ গাঙ্গুলী 

“এটা কিসের যুদ্ধবিরতি? শ্রীনগরের মাঝখানে এয়ার ডিফেন্স ইউনিট ফায়ার খুলেছে।” — বিস্ফোরণের শব্দের মাঝে এমনই ক্ষোভ উগরে দিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এক্স-এ।

শনিবার বিকেল ৫টা। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে একটি “পূর্ণাঙ্গ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি”-র ঘোষণা হয়েছিল মাত্র ঘণ্টা দুয়েক আগে। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই, ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও রাজস্থানের সীমান্ত অঞ্চল।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির ঘোষণা অমান্য করে প্রথমে গোলাবর্ষণ শুরু করে আখনূর, রাজৌরি এবং আরএস পুরা সেক্টরে। এর পাশাপাশি পাঞ্জাবের পাঠানকোটের মামুন ক্যান্টনমেন্ট এবং রাজস্থানের জয়সালমের ও বারমেরে একাধিক স্থানে দেখা যায় সন্দেহজনক ড্রোন।

কাশ্মীর উপত্যকায় শ্রীনগরের আকাশে উড়তে থাকে ড্রোন, শব্দ করে গর্জে ওঠে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও। একাধিক এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ—উধমপুর, গুরদাসপুর, বৈষ্ণোদেবী মন্দির এলাকা-সহ অন্তত ছ’টি এলাকায় সতর্কতামূলক ব্ল্যাকআউট।

“এটা বিশ্বাসঘাতকতা। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হামলা চালানো একটা রাষ্ট্রের চরিত্রকেই তুলে ধরে।” — বলেন প্রাক্তন ডিজিপি এসপি বৈদ।

ভারতীয় সেনার তরফে বিএসএফ-কে পাল্টা জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সীমান্তে মোতায়েন বাড়ানো হয়, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়।

পাকিস্তানের ডিজিএমও শনিবার বিকেল ৩:৩৫ মিনিটে ফোন করে ভারতীয় ডিজিএমও-কে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন। তীব্র সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ভারত এই প্রস্তাবে সম্মতি জানায়।

এই ঘোষণাকে স্বাগত জানান ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রী। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পর্যন্ত একে ‘বুদ্ধিমত্তা ও সাধারণ জ্ঞানের জয়’ বলে উল্লেখ করেন Truth Social-এ।

কিন্তু সেই সেলিব্রেশনের আয়ু ছিল অতি ক্ষণস্থায়ী।

উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিলের পাহেলগাম জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হন। তার পর থেকেই শুরু হয় উত্তেজনা। ৭ মে ভারত চালায় ‘অপারেশন সিন্দুর’—পাক অধিকৃত অঞ্চলে সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে আঘাত হানে।

৮ থেকে ১০ মে-র মধ্যে ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের আটটি বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত করে বলে সূত্রের খবর।

আজকের হামলা সেই শান্তি উদ্যোগকেই প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলেছে। প্রশ্ন উঠছে—পাকিস্তান যদি নিজের দেওয়া কথাও রাখতে না পারে, তবে কিসের ভিত্তিতে আলোচনা হবে ১২ মে?

সীমান্তের ওপারে কি সত্যিই ‘শান্তি’ চায় কেউ? নাকি প্রতিবারই শান্তির মুখোশ পরে লুকিয়ে রাখা থাকে যুদ্ধের ছুরি? ভারতের রাজনৈতিক মহল এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন—এই যুদ্ধবিরতি আর ‘বাধ্যতামূলক চুক্তি’র বেশি কিছু নয়, যার স্থায়িত্ব নির্ভর করছে পাকিস্তানের সদিচ্ছার ওপর।

ভারতীয় সীমান্ত এখন আগের থেকেও বেশি সতর্ক। আর শ্রীনগরের বিস্ফোরণ যেন বলেই দিচ্ছে—‘যুদ্ধবিরতির গল্প’ এখনও বাস্তব থেকে অনেক দূরে।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,300SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks