spot_img
35.7 C
Kolkata
Friday, June 13, 2025
spot_img

শব্দহীন এক শুটিং ফ্লোর: অনির্বাণের স্তব্ধ ক্যামেরা, টলিপাড়ায় অঘোষিত প্রতিরোধের ছায়া !

কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : নিজস্ব প্রতিবেদন :

দেবজিৎ গাঙ্গুলী :

টলিপাড়ার আলো-আঁধারির গল্পে আবার এক নতুন পর্বের সূচনা। তবে এ গল্পে নেই অ্যাকশনের ডাক, নেই “রোল ক্যামেরা”র শব্দ। আছে শুধু স্তব্ধতা।
একটি মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। শিল্পী হিসেবে নয় শুধু, পরিচালক হিসেবেও। সেট সাজানো, আলো প্রস্তুত, স্ক্রিপ্ট হাতে প্রস্তুত ইউনিট—তবু সেই শুটিং হয়নি। কারণ, কেউ এলেন না। কোনও টেকনিশিয়ান, কোনও কর্মী। সেটে হাজির হল না সহযোদ্ধারা।

অনেকেই বলছেন, এটা নিছক অনুপস্থিতি নয়, বরং এক সুপরিকল্পিত নিঃশব্দ প্রতিরোধ।

ঘটনার সূত্রপাত অনেক আগেই। অনির্বাণ, পরমব্রত, সুদেষ্ণা রায়—তাঁরা মামলা করেছেন ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ান্সের একচেটিয়া দাদাগিরির বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ, কাজের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে সংগঠনটি। আর তারই প্রতিক্রিয়ায়, মে মাসের শুরুতেই প্রস্তাব ওঠে—এই পরিচালক-অভিনেতারা যদি কোনও প্রজেক্টে যুক্ত থাকেন, তবে সেই প্রজেক্টে কাজ করবেন না কোনও টেকনিশিয়ান।

এই কাহিনির আরও এক করুণ অধ্যায় মঙ্গলবার খুলে গেল—যেদিন অনির্বাণের শুটিং বন্ধ হয়ে গেল নিঃশব্দে। কোনও পোস্টার ছেঁড়েনি, কেউ স্লোগান দেয়নি। শুধু না-জড়ানো হাতগুলো বলে দিল—“আমরা থাকব না তোমার পাশে।”
এর আগে সুদেষ্ণা রায়ের ছবিও বন্ধ হয়েছিল ঠিক এই পথেই। পরপর একাধিক টেকনিশিয়ান তাঁর কাজ থেকে সরে দাঁড়ান।
পরমব্রত, ইন্দ্রনীলের মতো নামী পরিচালকরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালত সাফ জানিয়েছিল—সৃজনশীল কাজে বাধা দেওয়া যাবে না। তবু বাস্তবে যে চিত্র অন্যরকম, তা দিনের আলোয় স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

অন্যদিকে এই পরিস্থিতিতে ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস ফোন ধরেননি, উত্তর দেননি বার্তায়। বরং জানা গিয়েছে, তিনি রওনা হয়েছেন তামিলনাড়ুর দিকে—সেখানে টেকনিশিয়ানদের আন্দোলনে সংহতি জানাতে। তিনি নাকি টলিপাড়ার বিতর্কও তুলবেন দক্ষিণের মঞ্চে।
কিন্তু এখানেই প্রশ্ন—নিজের উঠোনে আগুন জ্বলছে, আর তিনি খুঁজছেন প্রতিবেশীর ছাদ?

এখন টলিপাড়ার বাতাস ভারী—একটা প্রশ্ন আজ সবাইকে আলোড়িত করছে। ফেডারেশন কি নীরবেই একটি “কালো তালিকা” কার্যকর করছে?
শিল্পীর প্রতিবাদ কি এই শহরে একঘরে হয়ে যাবে?
আর আদালতের আদেশ কি ব্যঙ্গরসাত্মক নাট্যরূপে মঞ্চস্থ হচ্ছে—বারবার, অবলীলায়?

যদিও শুটিং বাতিল, ছবির কাজ থেমে যাওয়া—এসব নিছক খবর নয়, এগুলো আসলে এক বৃহত্তর সংকেত। সৃজনের জগতে যদি ভয় ঢুকে পড়ে, তবে ভবিষ্যৎ কোথায় দাঁড়াবে?
শিল্পীরা আজ প্রশ্ন করছেন, উত্তর দেবে কে?

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,400SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks