কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : নিজস্ব প্রতিবেদন :
নতুন করে রক্ত ঝরার আশঙ্কা আপাতত নেই—কিন্তু কতদিন? ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে জারি রইল সংঘর্ষবিরতি, তবে শর্তসাপেক্ষে। ১৮ মে পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পরই সিদ্ধান্ত হবে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে। দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও)-এর হটলাইন বৈঠকের পর এই সাময়িক ‘শান্তিচুক্তি’র ঘোষণা করা হয়েছে।
১০ মে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না, তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ১৮ মে ফের একবার দুই ডিজিএমও-এর আলোচনা শেষে। সীমান্তে ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ ফেরানোর চেষ্টায় দুই পক্ষই আপাতত কিছু নিষ্ক্রিয়তা বজায় রাখার পক্ষে মত দিয়েছে।
ভারতীয় সেনার বিবৃতিতে বলা হয়েছে—“সংঘর্ষবিরতির শর্ত মানা হচ্ছে কি না, তা ঘনঘন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা হবে।”
২২ এপ্রিল: পহেলগামের ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ নাগরিক। তার পর থেকেই উত্তাল সীমান্ত।
৭ মে: ভারত চালায় প্রতিশোধমূলক অপারেশন ‘সিঁদুর’। পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের ভিতরে জঙ্গি ঘাঁটিতে আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। ধ্বংস হয় ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি।
এর পাল্টা জবাব দিতে পাকিস্তানও ছুড়ে দেয় ড্রোন ও রকেট। লক্ষ্য—ভারতের বেসামরিক অঞ্চল ও সেনা ঘাঁটি।
ভারতও দেয় কড়া জবাব—পাকিস্তানের একাধিক বিমানঘাঁটি ও সেনা স্থাপনায় আঘাত হানে। ধ্বংস করা হয় পাকিস্তানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র।
এই ভয়ঙ্কর উত্তেজনার মাঝেই বৃহস্পতিবার হঠাৎ শান্তির বার্তা নিয়ে হাজির হন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। কাশ্মীর নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী বলে জানান তিনি। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি শান্তির আহ্বানও জানান।
তবে নয়াদিল্লি এখনও এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
এরই মধ্যে পাকিস্তানের জলসম্পদ মন্ত্রক সিন্ধু চুক্তি ফের কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে। তবে নয়াদিল্লির অবস্থান একেবারে স্পষ্ট—প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আদমপুর এয়ারবেস থেকে জানিয়ে দিয়েছেন,
“জল আর রক্ত একসঙ্গে বইতে পারে না। সন্ত্রাস আর আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না।”
যদিও সংঘর্ষবিরতির এই আপাত পর্ব শেষ হওয়ার আগেই সীমান্ত পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। অতীতে বহুবার এই ধরনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলেও তা টেকেনি।
তাই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—১৮ মে’র পর কী হবে? ভারত কি বিশ্বাস করবে পাকিস্তানের কথায়? নাকি আবারও শুরু হবে গোলাগুলি, রকেট আর মৃত্যুর স্রোত?