কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
পহেলগাম হামলার পর ইন্দাস জলচুক্তি (IWT) স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, চেনাব নদীর জল ব্যবহারে নিজেদের অধিকারকে সর্বাধিক মাত্রায় কাজে লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে ভারত। এরই অংশ হিসেবে চেনাবের উপর নির্মিত রণবীর খাল-এর দৈর্ঘ্য বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র সরকার, জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এখন পর্যন্ত এই নদীর জল মূলত কৃষিকাজে সীমিত মাত্রায় ব্যবহার করে এসেছে ভারত। কিন্তু চুক্তি স্থগিত থাকায় এখন এর ব্যবহার বিদ্যুৎ উৎপাদনের খাতেও সম্প্রসারণের পথ খুলেছে। এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা বলেন,“বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে এখন এই জলের ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে, যা আগে চুক্তির কারণে সীমিত ছিল।”
সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রণবীর খাল-এর দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে। এক কর্মকর্তা বলেন, “পরিকাঠামো নির্মাণে স্বাভাবিকভাবেই সময় লাগে, তাই সব স্টেকহোল্ডারদের দ্রুত কাজ এগিয়ে নিতে বলা হয়েছে।”
অন্যদিকে আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত নদীগুলোর জল ব্যবহার করে বর্তমানে ভারতে প্রায় ৩০০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। তবে চুক্তি স্থগিতের পর এই সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই (feasibility study) শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে কাঠুয়া, রবি ও পরাগওয়াল খালগুলোর পলিমাটি অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত ইন্দাস জলচুক্তি অনুযায়ী ইন্দাস নদী ও তার উপনদীগুলোর জলবণ্টন নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, রবি, বিয়াস ও সুতলজ নদীগুলো পূর্বাঞ্চলের নদী হিসেবে ভারতের ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত হয় এবং ইন্দাস, ঝেলম ও চেনাব পশ্চিমাঞ্চলের নদী হিসেবে পাকিস্তানের অধীনে যায়।
কিন্তু সম্প্রতি ২২ এপ্রিল পহেলগাম হামলার পর ভারত এই চুক্তি স্থগিত করে দেয়। ভারতের অবস্থান অনুযায়ী,
“যতদিন না পাকিস্তান আন্তরিকভাবে এবং স্থায়ীভাবে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ করছে, ততদিন ইন্দাস জলচুক্তি কার্যকর থাকবে না।”