কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : নিজস্ব সংবাদদাতা : শিলিগুড়ি :
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার থেকে উত্তরবঙ্গের তিনদিনের সফর শুরু করছেন। প্রথম দিন তিনি পৌঁছাবেন বাগডোগরায়। যদিও সফরের মূল লক্ষ্য প্রশাসনিক কার্যক্রম, তবে আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এই সফরকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন।
গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গের আটটি জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস ধীরে ধীরে সংগঠন মজবুত করেছে। যদিও গত লোকসভা নির্বাচনে তারা শুধুমাত্র কোচবিহার আসনটিই জিততে পেরেছিল, পরবর্তী উপনির্বাচন এবং দলীয় বিস্তারে জনসমর্থনের ইঙ্গিত মিলেছে।
সম্প্রতি বিজেপির দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা—আলিপুরদুয়ার বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ জন বারলা—তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় এই সফরের রাজনৈতিক তাৎপর্য আরও বেড়ে গিয়েছে।
সোমবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ির দিনবন্ধু মঞ্চে রাজ্যের উদ্যোগে উত্তরবঙ্গে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘Synergy’ সম্মেলনে অংশ নেবেন। এই সম্মেলন মূলত পর্যটন, হস্তশিল্প এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে কেন্দ্র করে আয়োজিত, যার লক্ষ্য উত্তরবঙ্গের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো।
সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী শিল্পপতিদের অভিযোগ ও প্রস্তাব শুনবেন এবং আগামী দিনের উন্নয়ন পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরবেন।
মঙ্গলবার ডাবগ্রামের ভিডিয়োকন ময়দানে একটি বড় ধরনের সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। পূর্বে এটি ওদলাবাড়িতে হওয়ার কথা থাকলেও পরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এই কর্মসূচিতে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলার সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন সরকারি সুবিধা ও প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন।
বুধবার সফরের শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরকন্যা অডিটোরিয়ামে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে অংশ নেবেন। সেখানে রাজ্যের মন্ত্রী, জেলার জেলাশাসক ও শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে উত্তরবঙ্গে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির অগ্রগতির মূল্যায়ন করা হবে।
রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক জানান, মুখ্যমন্ত্রী নিয়মিত উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে নজর দিয়ে থাকেন এবং এই সফর সেই ধারাবাহিকতার অংশ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিধানসভা ভোটের এক বছরেরও কম সময় বাকি থাকায় এই সফরের রাজনৈতিক তাৎপর্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক ঘোষণার মাধ্যমে জনমত টানার কৌশল এবং তৃণমূলের সংগঠনকে আরও চাঙ্গা করার চেষ্টাই সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।