কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
ভারতের তিনটি ভয়াবহ জঙ্গি হামলার মূলচক্রী ও শীর্ষ লস্কর-ই-তৈয়বা (LeT) সন্ত্রাসবাদী সাইফুল্লাহ খালিদ ওরফে রেজাউল্লাহ নিজামানি খালিদকে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। রোববার পাকিস্তানের বাদিন জেলার একটি রাস্তার মোড়ে তিনজন অজ্ঞাত বন্দুকধারী তাকে গুলি করে হত্যা করে বলে নিশ্চিত করেছে গোয়েন্দা সূত্র।
সাইফুল্লাহ খালিদ, যিনি একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন—যেমন আবু সাইফুল্লাহ খালিদ, বিনোদ কুমার, মোহাম্মদ সেলিম, ও রেজাউল্লাহ—তিনি দীর্ঘদিন নেপালে ভুয়া পরিচয়ে বসবাস করতেন। পরে তিনি পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে চলে যান এবং সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
খালিদ ছিলেন ২০০৬ সালের নাগপুরে আরএসএস সদর দফতরে হামলা, ২০০৫ সালে বেঙ্গালুরুর আইআইএসসি-তে হামলা, এবং ২০০৮ সালের উত্তরপ্রদেশের রামপুরে সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলার মূলচক্রী।
নাগপুর হামলায় তিন জঙ্গি নিহত হলেও, পরিকল্পনায় ছিল খালিদের নেতৃত্ব। বেঙ্গালুরু হামলায় প্রাণ হারান প্রখ্যাত অধ্যাপক মুনীশ চন্দ্র পুরী, আহত হন আরও চারজন। আর রামপুর হামলায় নিহত হন সাতজন সিআরপিএফ জওয়ান ও একজন সাধারণ নাগরিক।
২০০০ সালের শুরুর দিকে খালিদ ছিলেন লস্করের নেপাল মডিউলের দায়িত্বপ্রাপ্ত। সীমান্ত পার হয়ে ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ, অর্থ সংগ্রহ, নিয়োগ ও লজিস্টিক সহায়তার কাজ তিনিই দেখভাল করতেন।
তিনি লস্করের প্রখ্যাত “লঞ্চিং কমান্ডার” আজম চিমা ও ইয়াকুবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। ভারতীয় গোয়েন্দারা নেপাল মডিউল ধ্বংস করার পর তিনি পাকিস্তানে চলে যান এবং সেখানকার জামাত-উদ-দাওয়াহ (JuD)-এর সঙ্গেও যুক্ত হন।
পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের বাদিন ও হায়দরাবাদ জেলা থেকে লস্কর ও জুডের জন্য নতুন সদস্য নিয়োগ ও অর্থ সংগ্রহই ছিল তাঁর সাম্প্রতিক কাজ।
পাকিস্তানের স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যমে ব্যক্তিগত শত্রুতা-কে খালিদের মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তুলে ধরা হলেও, এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোনও সরকারি নিশ্চিত তথ্য এখনও মেলেনি।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, এটি লস্করের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, বা গোপন আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা অভিযানের ফল হতে পারে।
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলির বহু বছরের তালিকাভুক্ত শীর্ষ টার্গেট ছিল খালিদ। তাঁর মৃত্যু ভারতীয় নিরাপত্তা পরিকাঠামোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে।