কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব প্রতিবেদন :
“পাকিস্তান আমাদের জন্য শুধুমাত্র এক প্রতিবেশী নয়, এটি হতে পারে মধ্য এশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার একটি গেটওয়ে”—এমনই মন্তব্য করলেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার ইকবাল হুসেন খান।
শনিবার গুজরাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (GTCCI) এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি জানান, পাকিস্তানি ব্যবসায়ী নেতাদের জন্য ভিসা নীতিতে শিথিলতা আনছে বাংলাদেশ, যাতে দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়।
ইকবাল হুসেন বলেন, “আমরা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বিশ্বাস করি। সেই কারণেই পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা পাওয়া আরও সহজ করা হচ্ছে। দুই দেশ এখন ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের নিয়মিত ভিসা দিচ্ছে।”
তিনি আশাবাদী, চলতি অর্থবর্ষে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। উভয় দেশই এই মুহূর্তে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে।
অনুষ্ঠানে GTCCI সভাপতি বাও মুনির বলেন, “ভারতের পর দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (SAARC)-এর সবচেয়ে বড় দুটি অর্থনীতি হলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। তাই এই দুটি দেশ যদি আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে, তবে উভয়ের লাভ হবে।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের জিডিপি বর্তমানে ৪৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে পাকিস্তানের জিডিপি ৩৭৩ বিলিয়ন ডলার। তাঁর বক্তব্য, “এখন সময় একসঙ্গে পথচলার। বাণিজ্যের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগানো উচিত।”
শেখ হাসিনা সরকার পরিবর্তনের পর থেকে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কের বরফ খানিকটা গলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত কয়েক মাসে দু’দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বিনিময় ও কথোপকথন বেড়েছে।
মাত্র এক মাস আগেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ দুই দেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের কথা তুলে ধরেন, এবং বাংলাদেশকে নিয়ে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, চলতি বছরের মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সামরিক উত্তেজনার সময় বাংলাদেশ সংযম ও কৌশলী কূটনীতি বজায় রেখে পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছিল।
দক্ষিণ এশিয়ার দুই গুরুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে বরফ গলার এই মুহূর্তে যদি অর্থনীতি ও আঞ্চলিক সহযোগিতার সেতু গড়ে ওঠে, তাহলে লাভ হবে শুধু ঢাকা-ইসলামাবাদের নয়, গোটা মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ারও।