spot_img
35.7 C
Kolkata
Friday, June 13, 2025
spot_img

সীমান্তে যুদ্ধের আশঙ্কা, তবু সিংহগণনায় রেকর্ড—গুজরাটে বেড়েছে এশিয়াটিক সিংহের সংখ্যা !

কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক : নিজস্ব প্রতিবেদন : 

ভাবনগর/গান্ধীনগর:

পাকিস্তান সীমান্তের ঠিক পাশেই, রাজস্থানের ভূজের আকাশে যখন পাকিস্তানি ড্রোন ও টার্গেটেড মিসাইল হানা দিচ্ছে, তখন মাত্র ৩০০ কিলোমিটার দূরে গুজরাটের গির ও সংলগ্ন বনাঞ্চলে চলেছে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বৃহৎ এশিয়াটিক সিংহগণনা। যুদ্ধের সম্ভাবনার মধ্যেও থেমে থাকেনি প্রকৃতির পাঠ।

১০ মে থেকে ১৩ মে—চার দিন ধরে প্রায় ৩৫,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে চলেছে এই গণনা। বন দপ্তরের তিন হাজার কর্মী ছড়িয়ে পড়েছিলেন রাজ্যের ১১টি জেলায়। ফলাফল? পাঁচ বছরে ৩২ শতাংশ বৃদ্ধিতে গুজরাটে সিংহের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৯১-এ। ২০১৫ সালের ৫২৩ থেকে এই সংখ্যা ২০২৫-এ ৭০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।

বিশ্বে মুক্ত জঙ্গলে একমাত্র গির এবং গ্রেটার গির অঞ্চলে দেখা মেলে এশিয়াটিক সিংহের। কিন্তু এবার শুধু গির নয়, আশেপাশের করিডর এলাকাতেও লাফিয়ে বেড়েছে সিংহের উপস্থিতি। বন বিভাগ জানায়, গির জঙ্গলে বর্তমানে ৩৮৪টি সিংহ রয়েছে, কিন্তু তার বাইরেই বাস করছে আরও ৫০৭টি সিংহ।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তথ্য? বারডা অভয়ারণ্যে ১৪৬ বছর পর ফের সিংহের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। বর্তমানে সেখানে ১৭টি সিংহের বাস। মিটিয়ালা অভয়ারণ্যে সিংহের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে—২০২০ সালে যেখানে ছিল ১৬টি, বর্তমানে রয়েছে ৩২টি।

গণনার সময় ভারতীয় নৌসেনার INS বিক্রান্ত দাঁড়িয়ে ছিল করাচির মুখোমুখি, সীমান্ত উত্তেজনা চরমে। তবু, বিপদের মধ্যে বনকর্মীরা নিরলসভাবে চালিয়েছেন তাঁদের কাজ।

প্রধান মুখ্য বনপাল জয়পাল সিং জানান, “আমরা এবার শুধু জাতীয় উদ্যান নয়, করিডর অঞ্চলেও বিজ্ঞানসম্মতভাবে সিংহগণনা চালিয়েছি এবং ২২টি সিংহের নতুন অবস্থান শনাক্ত করেছি।”

এই গণনায় প্রথমবার ব্যবহৃত হয়েছে ‘সিম্বা অ্যাপ’, যা সিংহদের গোঁফের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে নির্ধারণ করে দেয় কতটি ইউনিক সিংহ রয়েছে। এ প্রযুক্তি বাঘ গণনায় ব্যবহৃত এম-স্ট্রাইপ অ্যাপের অনুরূপ।

তবে এই সাফল্যের পাশাপাশি উঠে আসছে নতুন চ্যালেঞ্জও। সিংহের সংখ্যা বাড়লেও সংরক্ষিত বনাঞ্চল বাড়েনি। গির-গিরনারে সিংহের সংখ্যা কমেছে ৪ শতাংশ, উল্টে গিরের বাইরের এলাকাতেই বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দিনে জনবসতি, নগরোন্নয়ন ও সিংহের সহাবস্থানের বিষয়টি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্সের লিড স্পেশালিস্ট কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সংখ্যা বৃদ্ধি আশাজনক হলেও এখন প্রয়োজন ইনোভেটিভ সংরক্ষণ মডেল।”

রাজ্য ও কেন্দ্র—দুই প্রশাসনের কাছেই এই বার্তা স্পষ্ট: গর্জন বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে সুরক্ষা ও সহাবস্থানের দায়। গিরের জঙ্গলে সিংহ থাকুক—কিন্তু সে যেন প্রকৃতির গর্ব হয়, মানুষের আশঙ্কা নয়।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,400SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles

Enable Notifications Thank You No thanks