কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :
দেবজিৎ গাঙ্গুলী :
কূটনৈতিক চক্রে গুঞ্জন, ইস্তফা-কাণ্ড ছিল সাজানো দৃশ্যপট ?
চারদিন ধরে টানটান নাটক। পদত্যাগ করবেন কিনা, তা নিয়ে চলছিল জল্পনা-কল্পনার ঝড়। অবশেষে শনিবার সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হলো—প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করছেন না। ইস্তফার সম্ভাবনা যে ছিলই না, তেমন ইঙ্গিতই দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের এক উচ্চপদস্থ উপদেষ্টা।
দুপুরে ঢাকার একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন,
“প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না। অন্য কোনও উপদেষ্টাও দায়িত্ব ছাড়ছেন না।”
এই ঘোষণার মাধ্যমে কার্যত চলতি সপ্তাহের অন্যতম রাজনৈতিক নাটকের পর্দা পড়ল। যদিও অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এই নাটকের চিত্রনাট্য আদৌ বাস্তব ছিল, না পরিকল্পিত কৌশল?
বৃহস্পতিবার থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়াতে শুরু করে ইউনূসের ইস্তফার খবর। তাঁর প্রাক্তন সহকারী নাহিদ ইসলাম ‘বিবিসি বাংলা’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন,
“স্যার (ইউনূস) পদত্যাগের কথা ভাবছেন।”
এই একটি বাক্যই দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল। রাজনৈতিক অন্দরে আলোচনা শুরু হয়—এই ঘোষণার পেছনে কি সেনাবাহিনীর চাপ? বিএনপির প্রভাব? নাকি নিজস্ব নৈতিক অবস্থান থেকে এমন চিন্তা?
এই ঘটনার পরপরই কূটনৈতিক মহলের একাংশ দাবি করতে শুরু করেন, “এটা ছিল একটা স্ট্র্যাটেজিক প্রপাগান্ডা, একটি পরিকল্পিত নাটক।” উদ্দেশ্য? হয়তো জনগণের প্রতিক্রিয়া যাচাই, কিংবা অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান মজবুত করা।
সাম্প্রতিক একটি সেনা অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জ়ামান ইউনূসের সরকারকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য চাপ দেন। এরপর থেকেই রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে ওঠে।
এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করেছিলেন, ইউনূস হয়তো সেনার চাপের মুখে পদত্যাগের কথা ভাবছেন। আবার কেউ কেউ বলেন, এ ছিল সরকারি কর্তৃত্ব ধরে রাখার এক অভিনব পন্থা।
ইউনূস এদিন জামায়াত-সহ একাধিক দলের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করবেন। রাজনৈতিক মহলের দাবি, এই বৈঠকেই হয়তো আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য রূপরেখা চূড়ান্ত হবে। এখন সেখানেই সমস্ত নজর।
সবমিলিয়ে যা দেখা গেল, তা কি আসলেই ঘটছিল? না কি ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এর নামেই এক কৌশলী নাট্যাভিনয়? মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ কাণ্ডে যা যা ঘটল, তা বুঝিয়ে দিল—বাংলাদেশের রাজনীতি এখনও টানটান নাট্যগুণে ভরপুর।