কলকাতা টাইমস নিউজ :নিজস্ব সংবাদদাতা :মুম্বই :
“বিমানবন্দরে বোমা লুকিয়ে রাখা হয়েছে। মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উড়িয়ে দেওয়া হবে।”—মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ এমনই একটি আতঙ্ক ছড়ানো ফোন এসে পৌঁছয় মুম্বই পুলিশের কন্ট্রোল রুমে। পরিচয়হীন এক ব্যক্তির এই হুমকি রাতারাতি উত্তেজনার কেন্দ্রে এনে দেয় দেশের অন্যতম ব্যস্ততম বিমানবন্দরকে।
১৯৯৩ সালের ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হোক কিংবা ২০০৮-এর ২৬/১১—সন্ত্রাস মুম্বইয়ের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে বারবার। তাই বোমা হামলার হুমকি যে নিছকই কৌতুক নয়, সেটা জানে পুলিশ প্রশাসন থেকে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সবাই।
সেই স্মৃতি মাথায় রেখেই মঙ্গলবার সকালেই এক মুহূর্ত না গিয়েই হাই অ্যালার্ট জারি করা হয় বিমানবন্দর এলাকায়। সক্রিয় হয়ে ওঠে বম্ব ডিসপোজ়াল স্কোয়াড, নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা শাখা।
মুম্বইয়ের এই হুমকি নতুন নয়। ১৭ মে-র কথা মনে আছে? ঠিক এমনই হুমকি এসেছিল ই-মেল মারফত—লক্ষ্য ছিল বিমানবন্দর ও তাজ মহল প্যালেস হোটেল। তারও আগে, মাসের শুরুতে মহারাষ্ট্র সচিবালয়ের কন্ট্রোল রুমেও এসেছিল একই ধরনের বোমা হামলার হুমকি ই-মেলে।
এসব ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তে নেমেছে সাইবার শাখাও।
অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। কল ট্রেস করে এখন অপরাধীর পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। প্রযুক্তি নির্ভর অনুসন্ধানের পাশাপাশি নজর রাখা হচ্ছে শহরের বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ, টাওয়ার লোকেশন ও সন্দেহভাজনদের গতিবিধির উপর।
একাধিক বোমা হুমকি ফোন এবং ই-মেল—এই ধারাবাহিকতাই প্রশাসনকে চিন্তায় ফেলেছে। উদ্দেশ্য যদি আতঙ্ক ছড়ানো হয়, তা হলেও এর পিছনে কোনও বৃহত্তর নকশা লুকিয়ে আছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলা এখন জরুরি।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ‘‘এটি মনস্তাত্ত্বিক হামলারও একটি রূপ। লক্ষ্য, জনমনে আতঙ্ক ও অবিশ্বাসের বীজ বপন করা।’’
এখনও পর্যন্ত মুম্বই বিমানবন্দর বা আশপাশে কোনও বিস্ফোরক মেলেনি। কিন্তু হুমকি যত বাড়ছে, ততই কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা বাড়ছে আরও বেশি সতর্ক থাকার। কারণ একটি ভুলও ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।