কলকাতা টাইমস নিউজ ডেস্ক :নিজস্ব সংবাদদাতা :
দক্ষিণ কলকাতার কালীঘাটে এক বাইক দুর্ঘটনা, আর তাতেই খুলে গেল ভুয়ো নথি ও সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়া এক বাংলাদেশির গোপন পর্দা। পুলিশের দাবি, ধৃত ব্যক্তির নাম আজ়াদ। বয়স ৪১। বাসিন্দা বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার। অভিযোগ, তিনি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং ন্যাজাটের এক ব্যক্তির সহায়তায় একাধিক ভুয়ো ভারতীয় নথিপত্র বানিয়েছিলেন।
১৮ মে, সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ ডিউটিতে যাওয়ার সময় নেতাজিনগর থানার এএসআই সুষেণ দাস কালীঘাটের টালিনালা মোড়ের কাছে আজ়াদের ট্যাক্সির ধাক্কায় গুরুতর জখম হন। পরে এসএসকেএম হাসপাতাল হয়ে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় এক বেসরকারি হাসপাতালে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর আজ়াদকে আটক করা হয় বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগে। সেখান থেকেই তদন্তে সামনে আসে বিস্ফোরক তথ্য—আজ়াদের কাছে থাকা ড্রাইভিং লাইসেন্স, আধার কার্ড, ভোটার আইডি এবং এমনকি ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কার্ডও ছিল ভুয়ো।
তদন্তে জানা যায়, আজ়াদ ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে এ দেশে প্রবেশ করেন। আর মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই এতগুলি ভুয়ো ভারতীয় নথি কীভাবে সংগ্রহ করলেন, তা নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছে পুলিশ।
এই ভুয়ো নথিপত্র তৈরির পেছনে মূল চরিত্র হিসাবে উঠে এসেছে ন্যাজাটের বাসিন্দা জ়াফর আলি শেখের নাম। পুলিশের দাবি, আজ়াদ তার কাছ থেকেই পরিচয়পত্র বানানোর যাবতীয় সহায়তা পান। জ়াফরকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
আজ়াদের কাছ থেকে কোনও বৈধ পাসপোর্ট উদ্ধার হয়নি। তাঁর আসল পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তবে আজ়াদের গ্রেপ্তারি শুধু একজনের পরিচয় ফাঁস নয়, বরং প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে আরও বড় এক চক্রের অস্তিত্ব নিয়ে। পুলিশ সূত্রে খবর, আজ়াদের মতো আরও বহু বাংলাদেশি পশ্চিমবঙ্গে ছদ্মপরিচয়ে বাস করছেন বলেই সন্দেহ। সেই লক্ষ্যে জ়াফরকে জেরা করে চক্রের গোড়ায় পৌঁছতে চায় পুলিশ।