কলকাতা টাইমস নিউজ : নিজস্ব প্রতিবেদন : নয়াদিল্লি :
রাষ্ট্রপতি ভবনের গনতন্ত্র মণ্ডপে মঙ্গলবার এক আবেগঘন মুহূর্তে ৬৮ জন কৃতী ভারতীয়ের হাতে তুলে দেওয়া হল পদ্ম সম্মান। জনসেবা থেকে বিজ্ঞান, নৃত্য থেকে চিকিৎসা—বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই সম্মান তুলে দিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
এ বছরের পদ্ম সম্মান তালিকায় যেমন আছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জগদীশ সিং কেহার, তেমনই আছেন কল্পনাতীত কীর্তির জন্য মরণোত্তর সম্মানে ভূষিত কথক নৃত্যশিল্পী কুমুদিনী লাখিয়া ও লোকসংগীতের কিংবদন্তি শারদা সিনহা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
২০২৫ সালের পদ্ম পুরস্কারের জন্য মোট মনোনীত হয়েছিলেন ১৩৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। তাদের মধ্যে প্রথম দফায় ৭১ জন এবং মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় ৬৮ জনকে সম্মানিত করা হল। এই সম্মান শুধু কৃতিত্ব নয়, বরং এক জনপদের আত্মার কাহিনি।
পদ্ম বিভূষণ: দেশের শ্রেষ্ঠদের কুর্নিশ
-
জগদীশ সিং কেহার: বিচারব্যবস্থায় অসামান্য অবদান।
-
কুমুদিনী লাখিয়া (মরণোত্তর): কথক নৃত্যকে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিষ্ঠা।
-
শারদা সিনহা (মরণোত্তর): লোকসংগীতের প্রাণবন্ত ধারক ও বাহক।
পদ্ম ভূষণ: গুণীজনের গর্ব
-
শোভনা চন্দ্রকুমার: নৃত্য ও চলচ্চিত্র জগতে অবদানের জন্য।
-
অনন্ত নাগ: চলচ্চিত্র শিল্পে দীর্ঘকালীন অবদান।
-
সাধ্বী ঋতম্ভরা: সমাজসেবায় বিশিষ্ট অবদান।
-
কৈলাশ নাথ দীক্ষিত: প্রত্নতত্ত্ব ও ইতিহাসচর্চায় যুগান্তকারী অবদান।
পদ্মশ্রী: নিঃশব্দ নায়কদের প্রতি রাষ্ট্রের স্যালুট
-
সোনিয়া নিত্যনন্দ: রক্তরোগ ও ইমিউনোলজিতে গবেষণায় অগ্রগণ্য।
-
রিকি কেজ: সংগীতকে পরিবেশবান্ধব বার্তার বাহক বানানো শিল্পী।
-
অশোক সরাফ: বহু দশকের বিনোদনজগতের বিশ্বস্ত মুখ।
-
সন্ত রাম দেশওয়াল: হিন্দি ও হরিয়ানভি সাহিত্যে সৃষ্টিশীলতা।
-
অজয় ভট্ট: বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত ইউএসবি প্রযুক্তির জনক।
-
আরিজিত সিং: আধুনিক ভারতীয় সংগীতের এক অনন্য কণ্ঠ।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের অন্যতম দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ হল “People’s Padma”—অর্থাৎ আলোচনার বাইরে থাকা, অথচ সমাজে বিপুল প্রভাব ফেলা ব্যক্তি ও উদ্যোগকে সম্মান জানানো। এ বছর ৩০ জন “অজ্ঞাত নায়ক” পেয়েছেন এই সম্মান—যাঁদের অনেকেই ক্যামেরার ফ্ল্যাশবাল্বে ধরা পড়েন না, কিন্তু তাঁদের কাজ আলো জ্বালায় সমাজে।
পদ্ম বিভূষণ, পদ্ম ভূষণ ও পদ্মশ্রী—এই তিন শ্রেণির পুরস্কার আজ আর কেবল কাগুজে তালিকায় সীমাবদ্ধ নয়। এগুলো হয়ে উঠেছে এক একটি জীবন্ত অনুপ্রেরণা, যারা দেখায়—কাজ করলে পরিচিতি আসে, কীর্তি করলে সম্মানও আসে।